করোনাকালে ট্রান্সফার বন্ধ করে কালকের মধ্যে বোনাস পরিশোধ করুন

ঈদ বোনাসের দাবিতে এবং শ্রমিকদের সারা জীবনের অর্জিত পাওনা বঞ্চিত করে কারখানা স্থানান্তরের প্রতিবাদে ঢাকার মালিবাগে অবস্থিত ড্রাগন সোয়েটার কারখানার শ্রমিকরা আজ ২১ মে ২০২০ সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করেছে। পরে তারা মিছিল করে শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান গ্রহন করে।

শ্রমিকদের বিক্ষোভে অংশ নিয়ে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র’র সভাপতি শ্রমিকনেতা মন্টু ঘোষ বলেন, এই করোনা মহামারীকালে কোন ধরণের কারখানা স্থানান্তর চলবে না। তিনি আগামীকালের মধ্যে ঈদ বোনাস পরিশোধ করার দাবি জানিয়ে বলেন, ড্রাগন সোয়েটার কারখানার শ্রমিকরা যদি বোনাস না পায় তাহলে ঈদের দিন খালি থালা হাতে শ্রমিকরা রাস্তায় থাকতে বাধ্য হবে। তিনি বলেন, অস্ত্র হাতে মুক্তিযুদ্ধ করেছি, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর প্রতিবাদ করায় দুই বছর জেল খেটেছি, সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে বারবার জেল-জুলুমের শিকার হয়েছি। মহামারীকালে সবাই খাবে শ্রমিক অনাহারে থাকবে, প্রতিবাদ করলে রাষ্ট্রের কর্মচারী শ্রমিক ও ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দকে চোখ রাঙাবে, ছোট ছোট মালিক শ্রম দপ্তরের বড় বড় কর্মকর্তাদের ধমকাবে এমন দিন দেখার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করি নাই।


বিক্ষোভে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র’র সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার বলেন, কথিত অভিযোগের নামে গতকাল থেকে হাতিরঝিল থানার পুলিশ শ্রমিকদের ফোন করে তাদের স্থায়ী-অস্থায়ী ঠিকানা শোনাচ্ছে। অথচ গত কয়েক দিন আন্দোলন চললেও শ্রমিকরা একটা ঢিল ছোড়া কিংবা গাছের পাতা ছেড়ার ঘটনা ঘটায়নি। মালিকের পক্ষে পুলিশের তৎপরতায় শ্রমিকদের মধ্যে বিরাট আতংক সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, প্রতি মাসে ড্রাগনের শ্রমিকরা রাস্তায় না নামলে তাদের পাওনা আদায় হয় না। এসময় পুলিশকে কখনোই আইনের পক্ষে দাঁড়াতে দেখা যায় না। কিন্তু মালিকের কথিত অভিযোগের ভিত্তিতে তারা শ্রমিক হয়রানি চালাচ্ছে। তিনি আগামীকালের মধ্যে শ্রমিকের ঈদ বোনাস পরিশোধ এবং কারখানা ট্রান্সফার বন্ধের দাবি জানান।


উল্লেখ্য, শ্রমিকদের কোন নোটিশ দেয়া না হলেও, সকল দপ্তরে ড্রাগন সোয়েটার কারখানা ঢাকার মালিবাগ থেকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মিয়ার বাজার এলাকায় স্থানান্তরের কথা মালিক পক্ষ জানিয়েছে। শ্রমিকরা এমন মহামারীকালে কারখানা স্থানান্তর বন্ধ রাখার জন্য মালিকপক্ষকে অনুরোধ করে। কিন্তু মালিকপক্ষ তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকে। আইনত শ্রমিকরা কুমিল্লা যেতে বাধ্য নয়। ফলে সকল শ্রমিকের সার্ভিস বেনিফিট, প্রভিডেন্ট ফান্ডের আইনানুগ পাওনা, অর্জিত ছুটির পাওনা, বহু শ্রমিকের মাতৃত্বকালীন ছুটির পাওনা, সংগঠন করার অপরাধে গত সাত আট মাসে চাকুরিচ্যুত শ্রমিকদের আইনানুগ পাওনা ইত্যাদি পরিশোধের দাবি জানানো হলে মালিক তা পরিশোধে অস্বীকার করে। এমতাবস্থায় শ্রমিকরা গত কয়েক দিন ধরে আন্দোলন করছে।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *