শ্রমিক ছাঁটাই ও কারখানা লে-অফ করবে না গার্মেন্ট মালিকরা

মে মাসে কোনো শ্রমিক ছাঁটাই ও কারখানা লে-অফ করবে না বলে সরকার ও শ্রমিকপক্ষের সঙ্গে একমত হয়েছেন পোশাকখাতের মালিকরা।

আজ বুধবার শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে গ্রামে ফেরা শ্রমিকরা কর্মস্থলে না ফিরলেও তাদের চাকরি যাবে না। বৈঠকের পর প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।

তিনি বলেন, চলতি মাসে যেসব শ্রমিক কাজ করেননি, তারা ঈদের আগে এপ্রিল মাসের বেতন হিসেবে তাদের মোট বেতনের ৬০ ভাগ বেতন পাবেন। লকডাউনের মধ্যেও যেসব কারখানা চালু ছিল এবং ওই সব কারখানায় যেসব শ্রমিক পুরো মাস কাজ করছেন তারা এপ্রিলের শতভাগ বেতন পাবেন। আর ২৬ এপ্রিল থেকে চালু হওয়া কারখানাগুলোতে যেসব শ্রমিক কাজে যোগ দিয়েছেন তারা আগের ২৫ দিনের মোট বেতনের ৬০ ভাগ ও বাকি ৫ দিনের শতভাগ বেতন পাবেন। কাজে যোগ দেওয়া বা গ্রামে অবস্থান করা-সব ধরণের শ্রমিকদের এপ্রিল মাসের বেতন তাদের মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের (এমএফএস) অ্যাকাউন্টে পাঠানো হবে।

মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, আগামী মে মাসে কোনো কারখানা শ্রমিক ছাঁটাই করবে না। কোনো কারখানা লে-অফ বা বন্ধ করবে না। মালিকরা এ ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিয়েছেন। আগামী মে মাসের বেতন ও ঈদের বোনাস বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শক পরিষদ আবারও বৈঠক হবে।

বিকেএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, এপ্রিলের বেতন নিয়ে হওয়া এসব সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে এই সভার কার্যবিবরণীসহ আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করবো। বাংলাদেশ ব্যাংক তফসিলি ব্যাংকগুলোকে সে অনুযায়ী নির্দেশণা দেবে। এপ্রিল মাসে কোন কোন শ্রমিক কতোদিন কাজ করেছে, আর কারা করেনি, তাদের বেতন সিটসহ তালিকা ব্যাংকগুলোকে দেব। ব্যাংক সে অনুযায়ী সরকার গঠিত ৫০০০ কোটি টাকার তহবিল থেকে শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে বেতন পাঠাবে। গ্রামে ফেরা শ্রমিকদের কর্মস্থলে না ফিরতে গতকালও আহ্বান জানিয়েছে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি বলেছে, যেসব শ্রমিক ঢাকার বাইরে রয়েছেন, তাদের এপ্রিল মাসের বেতন এমএফএসের মাধ্যমে পাঠানো হবে। কাজে না ফিরলে কোনো শ্রমিক চাকরি হারাবে না বলেও জানিয়েছে সংগঠনটি।

বৈঠকে উপস্থিত শ্রম মন্ত্রণালয়ের শ্রমিক নেতা সিরাজুর হক রনি কালের কণ্ঠকে বলেন, সরকার রপ্তানিখাতের শ্রমিকদের বেতন-ভাতার জন্য যে ৫০০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করেছে, সেখান থেকে পোশাকখাত প্রায় ৪২০০ কোটি টাকা পাবে। মালিকরা বলছেন, পোশাকখাতে প্রতিমাসে বেতনবাবদ ব্যয় ৩৮০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪০ ভাগ কর্মকর্তাদের, ৬০ ভাগ শ্রমিকদের পেছনে ব্যয় হয়। তাতে পোশাকখাতের শ্রমিকদের মাসিক মজুরির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ২৩০০ কোটি টাকা। এপ্রিল মাসে ৬০ ভাগ বেতন দেওয়ায় এখাতে ব্যয় হবে ১৫০০ কোটি টাকার মতো।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *