চরম করোনা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ কৃষক সমিতি ও বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতি আজ ২২ এপ্রিল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি পেশ করেছে। স্মারকলিপিটির অনুলিপি অর্থ মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মহোদয়দের কাছে পাঠানো হয়েছে।
কৃষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন ও ক্ষেতমজুর সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রেজা স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে বলা হয়, দেশের বর্তমান সংকটকালে অর্থনীতিতে যে ধস নেমেছে, প্রধানত কৃষি খাতকে রক্ষা করা ও তার পুনরুজ্জীবনের মধ্য দিয়েই তা থেকে উদ্ধার পাওয়া সম্ভব হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিতে আসন্ন ভয়াবহ মন্দায় আমাদের রপ্তানি ও প্রবাসীদের রেমিট্যান্স খাতে ধস নেমে আসবে। ফলে আগামী দিনে দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করতে হবে কৃষিকে। জনগণের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যের জোগান দিতে হলে ও অর্থনীতিতে গতি সৃষ্টি করতে হলে প্রধান অবলম্বন হতে হবে কৃষি খাতকে। সে ক্ষেত্রে মূল অবদান রাখতে হবে দেশের মেহনতি কৃষক ও ক্ষেতমজুরদের। তাই, বর্তমানে কৃষি ও কৃষি-সংশ্লিষ্ট কৃষক-ক্ষেতমজুরদের স্বার্থ রক্ষার প্রতি নজর দেয়া বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
কৃষকের বোরো ধান কাটা, মাড়াই, নিরাপদে ঘরে তোলা, বাজারজাতকরণ ইত্যাদি সার্বিক কাজে সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান; ক্ষেতমজুরদের ধান কাটার জন্য ফসলের এলাকায় বিনাখরচে যাতায়াত, স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা, থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্তসহ ১০ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যবিমা নিশ্চিত; ক্ষেতমজুরসহ গ্রামীণ মজুর পরিবারগুলোকে সেনা সহায়তায় চিহ্নিত করে তাদেরকে রেশন কার্ডের মাধ্যমে ৩ মাস বিনামূল্যে খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করা; সকল ঋণ/কিস্তি (মহাজনী, এনজিও, ব্যাংক ঋণ) মওকুফ; প্রতিটি ইউনিয়নে শস্য ক্রয়কেন্দ্র খোলা এবং চলতি বোরো মৌসুমে ২০ লক্ষ টন ধান সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ও ১০ লক্ষ টন চাল চাতাল মালিকের মাধ্যমে সরকার নির্ধারিত দামে ক্রয়ের ব্যবস্থা করা; বর্তমান সংকটকালে ক্ষুদ্র ও মাঝারী সবজি চাষি, পোল্ট্রি, ডেইরি ও গবাদিপশু খামারীকে রক্ষায় জনপ্রতি দশ হাজার টাকা সরাসরি সহায়তা প্রদান ও ২% সরল সুদে ঋণের ব্যবস্থা; সবজি জাতীয় কৃষিপণ্য সরকারি উদ্যোগে বাজারজাত করার ব্যবস্থা করা, ত্রাণ-সাহায্য বিতরণে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, দলীয়করণ বন্ধ করা, গ্রামাঞ্চলে কর্মরত সকল ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, পরিবহণশ্রমিক ও ক্ষেতমজুরদের সুরক্ষায় মাস্ক, পিপিই ইত্যাদির ব্যবস্থা করা; দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পর্যায়ক্রমে ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকারি ক্রয়কেন্দ্র, খাদ্যগুদাম ও সবজিচাষ অধ্যুষিত অঞ্চলে হিমাগার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করাসহ স্মারকলিপিতে ১০ দফা দাবি জানানো হয়।