শ্রম ভবনের সামনে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রে’র বিক্ষোভে জলি তালুকদার বলেন ‘ঘর পোড়ায় আলু পোড়া’ খেতে মালিকরা শ্রমিকদের মৃত্যঝুঁকিতে ঠেলে দিয়েছে বিজিএমইএ।
কর্তৃক সকল গার্মেন্ট কারখানা লে-অফ ঘোষণা, অর্ধেকের বেশী কারখানায় এখনো গত মাসের মজুরি পরিশোধ না করা এবং গত চার সপ্তাহে কমপক্ষে ত্রিশ হাজার শ্রমিক ছাটাই এর প্রতিবাদে-
আজ ১৬ এপ্রিল ২০২০, বৃহস্পতিবার শ্রম ভবনের সামনে সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র। বেলা ১১টায় শ্রম ভবনের ফটকে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন গার্মেন্ট টিইউসির সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে শ্রমিকনেতা জলি তালুকদার বলেন, করোনা মহামারী একটি বৈশ্বিক দুর্যোগ, বাংলাদেশ এই আসন্ন মহাবিপর্যয়ের সবে মাত্র প্রথম পর্যায় অতিক্রম করছে। দেশের দুর্ভাগ্য করোনা মহামারীর সুযোগ নিয়ে গার্মেন্ট শিল্পের মালিকরা ব্যাপক ছাটাই, কারখানা লে-অফ ঘোষণা এবং শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধ না করার মধ্য দিয়ে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।
তিনি বলেন, মালিকরা সরকারের কাছ থেকে বড় বেল-আউট আদায়ের দরকষাকষির কৌশল হিসেবে শ্রমিকদের জিম্মিদশায় ফেলেছে। এই মহামারীতে শ্রমিকদের ওপর লে-অফ, ছাটাই, বেতন বকেয়া রাখাসহ নানান জুলুম চাপিয়ে শ্রমিকদের রাস্তায় নামতে বাধ্য করছে মালিকরা। এই মহামারীর সময়ে শ্রমিকদের মৃত্যুঝুঁকিতে ঠেলে দিয়ে মুনাফা কামানোর চেষ্টা ‘ঘর পোড়ায় আলু পোড়া’ খাওয়ার সামিল।
বক্তব্যে জলি তালুকদার বলেন, ব্যাপকভাবে যাতে সংক্রমণ না ঘটে সেজন্য সরকার দেশব্যাপী সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। মালিকরা ক্রয় আদেশ স্থগিত-বাতিলসহ নানান ছুতো তুলে সংকটের শুরুতেই শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধে অপারগতা প্রকাশ করে। যার প্রেক্ষিতে সরকার শ্রমিকদের মজুরিবাবদ ইতোমধ্যে ৫ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা ঘোষণা করেছে। তাসত্ত্বেও মালিকরা সকল কারখানা একযোগে লে-অফ ঘোষণা করেছে। মালিকদের এই কর্ম শুধু অমানবিক নয়, এটা ঘৃণ্য বর্বরতা। তিনি বলেন, মহামারী মোকাবেলায় সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির অধিন কারখানা বন্ধ রাখতে হবে। এক্ষেত্রে কোন অবস্থাতেই শ্রম আইনের ১৬ ধারা প্রয়োগ অর্থাৎ কারখানা লে-অফ ঘোষণা করা যাবে না।
জলি তালুকদার সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, অধিকাংশ শ্রমিক এখন লে-অফের অর্থ না বুঝলেও বেতন নেয়ার সময় আসল ঘটনা ঠিকই বুঝতে পারবে। সরকার যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণে ব্যর্থ হলে, লে-অফ এর ফলে পরবর্তিতে যে শ্রমিক বিদ্রোহ ঘটবে তার দায়-দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জলি তালুকদার হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, এই সময়ে সকল ছাটাই, বরখাস্ত, জোরপূর্বক ইস্তফা বন্ধ এবং গত চার সপ্তাহে সংগঠিত সকল চাকুরিচ্যুতি বাতিল ঘোষণা করতে হবে। করোনা মহামারীর সুযোগে গত চার সপ্তাহে গার্মেন্ট শিল্পে অন্তত ত্রিশ হাজার শ্রমিক ছাটাই, বরখাস্ত, জোরপূর্বক ইস্তফার ঘটনা ঘটেছে। একেকটি কারখানায় একসাথে একশত থেকে এক হাজার শ্রমিক ছাটাই এর ঘটনা ঘটেছে।