আশুলিয়ায় ফ্যান্টাসির সামনে ২৫ হাজার টাকা মজুরির দাবিতে বিক্ষোভ

আজ আশুলিয়ায় ফ্যান্টাসির সামনে ২৫ হাজার টাকা মজুরির দাবিতে বিক্ষোভ সভা ও মিছিল অনুষ্ঠিত

৬৫% বেসিক ১০% ইনক্রিমেন্ট, ৭ গ্রেডের বদলে ৫ গ্রেড চাই, খেয়ে-পরে ভাত কাপড়ে শিক্ষা-পুষ্টি-সুচিকিৎসা ও বিনোদনে বাঁচতে চাই

আজ ১৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ২০২৩ বিকাল ৪ টায় বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির আশুলিয়া শাখার উদ্যোগে ২৫ হাজার টাকা পোশাক শ্রমিকের মজুরি নির্ধারন, ৬৫% বেসিক, ১০% ইনক্রিমেন্ট এর দাবিতে ফ্যান্টাসি কিংডমের সামনে এক বিক্ষোভ সভা ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। আশুলিয়া শাখার সভাপতি জিয়াদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, গণসংহতি আন্দোলনের সহসমন্বয়ক রোকুনুজ্জামান, গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন, বিল্লাল শেখ, নুরুল ইসলাম, শামীম হোসেন, হযরত বিল্লাল, বিল্লাল শেখ, নাসিমা আক্তার, সাবিনা ইয়াসমিনসহ অন্যান্য স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, চাল-ডাল-মাছ মাংস-দুধ-ফল মুলের হিসাব বাদ দেই। শ্রমজীবির স্বস্তা আমিষও ১টি ডিমের দাম ১৪-১৫টাকা, বলে দেয় পোশাক শ্রমিকসহ দেশের শ্রমজীবি মানুষের জীবনে বেহাল দশার কথা। ৪ সদস্যর পরিবার যদি দিনে ১ টি করে ডিম খেতে চায়, তাও দরকার ১৮০০ টাকা। যা তাদের সাধ্যের বাইরে। গত ৫ বছরে দফায় দফায় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ৮ হাজার মজুরিতে চলা এখন অসম্ভব। নেতৃবৃন্দ যোগ করেন, ধার-কর্য্য, কম পুষ্টি-কম খাবার, সন্তানের শিক্ষা ও মৌলিক চাহিদার নানা দিক কাটছাট করেও শ্রমিকরা বর্তমান বাজারে আর চলতে পারছে না।  একদিকে কমপুষ্টি, অন্যদিকে কারখানায় অধিক পরিশ্রমে তারা অসুস্থতায় ও রোগে শোকে ভুগছে। এই কঠিন সময়ে মজুরি বোর্ড ৬ মাস মেয়াদের ৫ মাস পার করেও কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়ায় বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, এই মুহুর্তে দ্রুত ২৫ হাজার টাকা মজুরি সময়ের দাবি, এর কোন বিকল্প নেই। সরকারী তথ্যানুযায়ী মালিকদের যে হারে রপ্তানী ও আয় বাড়ছে তাতে ২৫ হাজারের মজুরি প্রদান তাদের সামর্থ্য মধ্যেই পরে। তবু কেন নতুন মজুরি ঘোষণায়  বিলম্ব ? — প্রশ্ন তোলেন নেতৃবৃন্দ।

তারা আরো বলেন, যদিও নানা গবেষণা ১জন  শ্রমিকের পরিবার নিয়ে চলতে কমপক্ষে ৪০ হাজার টাকা দরকার বলেছে, তবুও শিল্প ও দেশের সামর্থ্য বিচারে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা মজুরির দাবি উঠেছে। তারা বলেন, কোন মতে খেয়ে-পরে, ভাত কাপড়ে বাঁচতেই পোশাক শ্রমিকের ন্যুনতম ২৫ হাজার প্রয়োজন। এরসাথে যথাযথ পুষ্টি, শিক্ষা-প্রশিক্ষন, সুচিকিৎসা ও বিনোদনের মত মৌলিক চাহিদা পুরণনের জন্যও আরো বেশী আয়োজন দরকার, যা জন্য সরকারকেও এগিয়ে আসতে হবে। শ্রমিকদের জন্য হাসপাতাল, জীবন বীমা, সন্তানদের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মাতৃত্বকালীন সুবিধাসহ অন্যান্য সুযোগ বৃদ্ধিতে সরকারের সামাজিক সুরক্ষাখাত থেকে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। নেতৃবৃন্দ উদ্বেগসহ বলেন, সরকারী কর্মচারীর সর্বনি¤œ পদে বেতন প্রায় ১৬৯৫০ টাকা(২০১৫), ব্যাংকের সর্বনি¤œ পদ বা পরিচ্ছন্নতাকর্মীর বেতন ২৪, হাজার টাকা (২০২২) স’মিলের শ্রমিকের বেতন ১৭,৯০০ টাকা, জাহাজ ভাঙ্গা শ্রমিকের ১৬,০০০ টাকা। রপ্তানীর শীর্ষখাতের কারিগর হয়ে পোশাক শ্রমিকরা কেন ৮ হাজার টাকায় আটকে রাখা যাবে না। কমপক্ষে ২৫ হাজার তাদেও মজুরি করতে হবে অভিমত প্রকাশ করেন নেতৃত্ব। তারা বলেন সংগঠনের ৭ দফার মধ্যে কমপক্ষে ৬৫% বেসিক অন্তত গুরুত্বর্পর্ণ। কারন বেসিকের উপর শ্রমিকের ওভারটাইম, গ্রাচুইটি, বাৎসরিক ছুটি, মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধা নির্ভরশীল। কোনভাবেই বেসিক ৬৫% কম করা যাবে না বলে অভিহিত করেন তারা।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *