কৈশরবান্ধব স্কুল ও নারীবান্ধব হাসপাতাল গড়ে তোলার আহ্বান

কৈশরবান্ধব স্কুল ও নারীবান্ধব হাসপাতাল গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা বলেছেন, সমাজের প্রচলিত টাবু ও কুসংস্কার প্রথা ভেঙে নারী ও কিশোরীদের এগিয়ে যেতে হবে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক সিলেবাসে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সচেতনতা বাড়াতে সরকার, রাজনীতিবিদ, সিভিল সোসাইটি, শিক সমাজ ও পরিবারকে যুক্ত করতে হবে। গ্রাম পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিকসহ সকল হাসপাতালকে নারীবান্ধব করে গড়ে তুলতে হবে।

সোমবার রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কনফারেন্স হলে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত দুই দিনব্যাপী ‘জাতীয় এসআরএইচআর কনফারেন্স ও যুব/কৈশর মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান তারা। যুব ও কিশোর-কিশোরীদের জন্য নিশ্চিত হোক যৌন প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত মেলার উদ্বোধন করেন শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী।

বিএনপিএস’র নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীরের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন সিবিএইসসি ট্রাস্ট ও বিএমআরসি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী। বিএনপিএস’র উপ-পরিচালক শাহনাজ সুমীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ফাস্ট সেক্রেটারী এনজিকো লরেনজো, নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের পলিসি অ্যাডভাইজার মুশফিকা জামান সাতিয়ার, কেএমকেএস’র নির্বাহী পরিচালক শেফালী কা ত্রিপুরা, সিমাভি বাংলাদেশের অফিসার তুহীন সরকার প্রমূখ।

অনুষ্ঠানে ডা. সৈয়দ মোছাচ্ছের আলী বলেন, সমাজের মুলধারা থেকে যারা বাইরে রয়েছে, বিশেষ করে নারী সমাজকে হাতে হাত ধরে এগিয়ে নিতে হবে। নারী সমাজ পেছনে রেখে রাষ্ট্রের উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচার-প্রচারণা বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, স্কুলে সবচেয়ে বেশি যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য প্রজনন বিষয়ে শিা দেওয়া দরকার। কিন্তু স্কুলে এসব বিষয়ে পাঠদানে অনাগ্রহী শিকরা। সমাজ ও পরিবারের মাঝে একই ধরণের অনাগ্র রয়েছে। এটা এক ধরনের চ্যালেঞ্জ।

তিনি আরও বলেন, শুধু হাত মেলালে চলবে না। সম্মিলিত ভাবে কাজ করলেই সফলতা আসবে। এখন আমাদের দায়িত্ব হবে নারীদের যৌন ও স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে সচেতন করে গড়ে তোলা।

বীর মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবীর বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে আমরা একটি প্রকল্প নিয়ে কাজ করেছি। কিন্তু সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া লক্ষে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এতে বড় পরিসরে মানুষের মাঝে সচেনতা গড়ে ওঠবে। সারা দেশে স্থানীয় পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিক, জেলা ও উপজেলা হাসপাতালেও নারী বান্ধব কর্নার ও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।

মুশফিকা জামান সতিয়ার বলেন, বর্তমানে দেশে নারীদের সংখ্যা ৫১ শতাংশ। সিভিল সোসাইটি, সরকার ও সহযোগী রাষ্ট্রগুলো সকলে একত্রে কাজ করলে নারীরা রাষ্ট্রের উন্নয়নশীল কাজে আরো ভূমিকা রাখতে পারবে। তারা দেশের অর্থনীতিতেও ভুমিকা রাখবে। সকল কমিউনিটি ক্লিনিক ও হাসপাতালে নারীদের স্বাস্থ্যসেবা কর্নার চালু করার পরামর্শ দেন তিনি।

শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী বলেন, নারীরা আজো অবহেলিত-উপেক্ষিত। তারপরও নারীরা ৩০-৪০ বছর আগে যেসব কথা বলতে পারত না, এখন তারা তাদের সেসব স্বাস্থ্যসেবার কথা মুখফুটে বলতে পারছে। নারীরা সমাজকে আলোকিত করে সামনে দিকে এগিয়ে যাবে, এটাই প্রত্যাশা করি।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *