বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে দুই মারমা কিশোরীর ওপর যৌন নির্যাতনের ঘটনায় হিল উইমেন্স ফেডারেশনের উদ্বেগ প্রকাশ, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজার দাবি

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি ও খাগড়াছড়ির রামগড়ে দুই মারমা কিশোরীর ওপর যৌন নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে হিল উইমন্সে ফেডারেশন (এইচডব্লিউএফ)।

৭ মার্চ ২০২০ সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিরূপা চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক মন্টি চাকমা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, গত ০৩ মার্চ বান্দরবানের রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নের কাইন্তারমুখ এলাকায় নির্মাণ শ্রমিক রাকিব কর্তৃক মারমা কিশোরীকে ধর্ষণ চেষ্টা এবং এর এক দিনের ব্যবধানে খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার বেলতলা পাড়া এলাকায় মোঃ আব্দুল মান্নান (মনু) কর্তৃক অপর এক মারমা কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় রোয়াংছড়িতে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় রাকিবকে আটক করা হলেও রামগড়ে মারমা কিশোরীকে ধর্ষণকারী আব্দুল মান্নানকে এখনো আটক করা হয়নি।

বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে নারী-শিশু ধর্ষণ হত্যার ঘটনা ভয়াবহ ও মহামারির রূপ নিয়েছে। কিন্তু অপরাধীরা ক্ষমতাশালী লোকজনের সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকায় তাদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক সাজা হয় না। এই বিচারহীনতার কারণেই নারী-শিশুর ওপর নির্যাতনের মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

রামগড়ে মারমা কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনা উল্লেখ করে নেতৃদ্বয় বলেন, রামগড়ে মারমা কিশোরীকে হত্যার উদ্দেশ্যে নিজ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে। ঘটনার পরে ভিকটিমের পরিবার স্থানীয় থানায় মামলা দিতে গেলে পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করে। পরে স্থানীয় মুরুব্বি ও জনপ্রতিনিধিদের চাপে মামলা নিতে বাধ্য হয় পুলিশ। এতেই স্পষ্ট হয়, পাহাড়ে জাতিগত নিপীড়নের অংশ হিসেবে নারী নির্যাতনের ঘটনাগুলো বরাবরই ধামাচাপা দিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়ে থাকে।

বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পাহাড়ি নারী ধর্ষণের মেডিক্যাল টেস্ট রিপোর্ট প্রদানের ওপর সরকারের গোপন নিষেধাজ্ঞা জারি থাকায় পাহাড়িরা সুষ্ঠু বিচার ও আইনি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আর এই গোপন নিষেধাজ্ঞার কারণে অপরাধীরা দোষী সাব্যস্ত না হয়ে রেহাই পেয়ে যাচ্ছে।

বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় অবিলম্বে রামগড়ে কিশোরীকে ধর্ষণকারী চিহ্নিত আব্দুল মান্নাকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও রোয়াংছড়িতে মারমা কিশোরী ধর্ষণ চেষ্টাকারী আটক রাকিবের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। একই সাথে নেতৃদ্বয় সেটলারদের পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে প্রত্যাহারপূর্বক নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করারও দাবি জানিয়েছেন।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *