হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের গাজীপুর ইউনিয়নের সোনাচং গ্রামে সাবেক স্বামীর হাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হাত-পা বিচ্ছিন্ন হয়ে নির্মমভাবে খুন হওয়া আকলিমা আক্তারের ৭ সন্তান এখন দিশেহারা। গত শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় খুন হন আকলিমা আক্তার (৩৫)। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রায় ১৫ বছর পূর্বে গাজীপুর ইউনিয়নের সোনাচং গ্রামের ফজল মিয়ার পুত্র সুজন মিয়া (৩৮) সঙ্গে একই ইউনিয়নের ছনখলা গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের কন্যা আকলিমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের কোলজুড়ে ৭ সন্তান জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু পরবর্তীতে বনিবনা না হওয়ায় সম্প্রতি তাদের মধ্যে তালাক হয়ে গেলে খেতামারা আশ্রয়নে অবস্থান নেয় আকলিমা।
গত শনিবার সন্ধ্যার আগমুহূর্তে বাড়ির সামনে একটি নারকেলগাছ পরিষ্কার করছিলেন সুজন মিয়া। ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন আকলিমা। এ সময় একে অপরকে গালাগাল দেন। একপর্যায়ে সুজন মিয়া তাঁর হাতে থাকা দা দিয়ে আকলিমাকে কোপাতে শুরু করেন। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আকলিমার বাঁ হাত কনুই থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আর ডান হাতের কবজি কেটে যায়। একইভাবে বাঁ পা গোড়ালি থেকে ঝুলে থাকে। ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত সুজন বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে থানার ওসি রাশেদুল হক তার নিজ গাড়িতে করে আকলিমাকে চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সিলেট নেয়ার পথে নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি এলাকায় আকলিমার (২৮) মৃত্যু হয় বলে জানান তার ভাই ফিরোজ মিয়ার ওরফে রফিক। রাতেই নিহতের ভাই ফিরুজ মিয়া বাদী হয়ে চুনারুঘাট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এলাকাবাসীর সহযোগিতায় সুজন মিয়াকে আটক করে চুনারুঘাট থানার পুলিশ। সুজন রোববার বিকেল সাড়ে ৫ টায় হবিগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল হালিমের কাছে হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। চুনারুঘাট থানার ওসি রাশেদুল হক জানান, নিহত আকলিমা ৭ ছেলে-মেয়ে ও তাকে রেখে আরও দুটি বিয়ে করেছিলেনে। সেই ক্ষোভে আকলিমার হাত-পা কেটে দিয়েছেন তিনি। আকলিমা-সুজন দম্পতির মেজো মেয়ে তানজিনা আক্তার জানান- “তার বাবা মাদকাসক্ত। প্রায়ই নেশা করে বাড়ি ফিরে তাদের মাকে নির্যাতন করতেন। খুনী সুজন বর্তমানে হবিগঞ্জ কারাগারে আছেন।