ধান কাটার মৌশুমে কতগুলো বিশেষ জরুরী করনীয়”– মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম

‘করোনা মহামারি’ প্রতিরোধ করা এখন সবচেয়ে জরুরী কাজ। সেজন্য ‘পারস্পরিক শারিরিক দুরত্ব’ বজায় রাখা এখনও সকলের ক্ষেত্রে প্রধান ও অপরিহার্য কর্তব্য। কিন্তু ঘরে বসে থাকলে অনেকেরই রোজগার বন্ধ হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় বিপুল সংখ্যক মানুষ ‘অনাহারের’ বিপদের মুখে পরবে। সে সব মানু্ষকে এই নিশ্চিয়তা দিতে হবে যে, কাজে না গিয়ে ঘরে বসে থাকলেও সরকার এ ধরনের সব মানুষকে বিনামূল্যে খাদ্য সরবরাহ করবে। তাহলেই কেবল এ সব মানুষকে ঘরের বাইরে বেড় হওয়া থেকে বিরত রাখা সম্ভব হতে পারে।
এর সাথে এই মুহুর্তের আরেকটি অতীব জরুরী কর্তব্যের বিষয় হলো, দেশের সামগ্রিক ‘খাদ্য নিরাপত্তা’ নিশ্চিত করার বিষয়টি। ২/৪ দিনের মধ্যে ধান কাটা শুরু হয়ে যাবে। মাসখানেকের মধ্যে মাঠের পেকে ওঠা ধান কেটে ঘরে ওঠাতে হবে। এ কাজটিকে স্থগিত রাখার কোন সুযোগ নেই। সব ধান কেটে উঠাতে না পারলে দেশে মারাত্মক খাদ্য ঘাটতি সৃস্টি হবে। সেটি দুর্ভিক্ষের মতো বিপদের জন্ম দিতে পারে। তাই, ‘করোনা’ থেকে সুরক্ষা-ব্যবস্থার মধ্যে থেকেও ‘ধান কাটার’ ব্যবস্থা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিশেষ কতগুলো কাজের মধ্যে অন্যতম হলো –

১) ধান কাটার কাজের জন্য যারা নিজ এলাকা থেকে অন্য এলাকায় যেতে চান, তাদের জন্য বিশেষ যানবাহন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সহ ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।

২) প্রতিবার গ্রামে প্রবেশ ও প্রস্থানের সময় সকলেরই হাত পা সাবান দিয়ে ধোয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

৩) এলাকার বাইরে থেকে ‘ধান কাটার লোক’ না আসায় অথবা অন্য কোন কারনে যদি শ্রমিকের স্বল্পতা বিরাজ করে তাহলে নিজ এলাকার মানুষদেরকেই পরস্পর সহযোগিতার ভিত্তিতে পালাক্রমে একে অপরের ধান কেটে দেয়ার পদক্ষেপ নিতে হবে।

৪) কৃষকের ঘরে ধান ওঠার পর সে যতোটা পরিমান ধান বাজারে বিক্রি করতে চান তার সবটা সরাসরি সেই কৃষকের কাছ থেকে সরকারীভাবে নির্ধারিত ১,০৪০ টাকা মন দরে কিনে নিতে হবে। এই ধান অস্থায়ী গুদামে সংরক্ষন করতে হবে। এ জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ করতে হবে।

৫) ধান কাটার জন্য যেখানে যেখানে সম্ভব ও প্রয়োজন সেখানে সরকারিভাবে হার্ভেস্টার বা রিপার পাঠতে হবে।
৬) ধান ছাড়া অন্যান্য ফসল, শাক-সবজি-ফল-মূল, মাছ, পোলট্রি, দুগ্ধ খামার প্রভৃতির ক্ষেত্রেও অনুরুপ ব্যবস্থা নিতে হবে।

৭) সরকারি অনুদানের অর্থের সম্পুর্ণ পরিমান যেন নগদ টাকায়া অথবা উপকরনের আকারে খোদ কৃষক ও ক্ষেতমজুরদের হাতে পৌছায় তা নিশ্চিত করতে হবে। — ইত্যাদি।”

লিখেছেনঃ মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সভাপতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *