রোববার (১২ এপ্রিল) সকাল থেকে সাভারের মাস্ক ডিজাইন লিমিটেড, তেঁতুলঝোড়া এলাকার র্যাকেব অ্যাপারেলস, আরএমজি সোয়েটার, রাজাসনের আদিত্য অ্যাপারেল লিমিটেড, গোল্ডেন স্টিচ লিমিটেড, আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার পাইয়োনিয়ার ফ্যাশন লিমিটেড, বাড়ইপাড়া এলাকার ত্বোয়া-হা, কাঠগড়া এলাকার সোরাইয়া ও নরসিংহপুর এলাকার খান ম্যানসন ছাড়াও বেশ কয়েকটি কারখানায় মাস্ক পড়ে অবস্থান নিয়ে এই বিক্ষোভ করেছে শ্রমিকরা।
আশুলিয়ার বাড়ইপাড়া এলাকার ত্বোয়া-হা টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানার শ্রমিক রবিন বলেন, এই কারখানায় প্রায় সহস্রাধিক শ্রমিক কাজ করেন। আমাদের বেতন দেওয়ার কথা বলে টালবাহানা করছে মালিক পক্ষ। গত ৮ তারিখে বেতন দেওয়ার কথা ছিল কিন্তু ৮ তারিখে বেতন না দিয়ে ১২ এপ্রিল আজ বেতন দেওয়ার দিন ধার্য করে। আজ আবার বেতন না দিয়ে আবার ২০ তারিখ দেওয়ার কথা বলছে কর্তৃপক্ষ। তিনি বলেন, এরকম টালবাহানা করার এটা সময় নয়, আমরা সবাই বিপদগ্রস্ত। তারপরেও বিপদের দিকেই ঠেলে দিচ্ছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। পেটে ভাত নাই সামাজিক দূরত্ব দিয়ে কি হবে। যেভাবেই হোক বেতন চাই আমরা।
কাঠগড়া আমতলা এলাকার সোরাইয়া ফ্যাশনের শ্রমিক মাসুদ রানা বলেন, আমরা ফেব্রুয়ারি মাসের অর্ধেক আর মার্চ মাসের বেতন পাবো। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ আজ (১২ এপ্রিল) দিতে চেয়ে আবার ২০ এপ্রিলে দেওয়ার কথা বলছে। আমাদের এখন বাজার থেকে নগদ টাকায় বাজার করতে হয়। বেতন না দিলে আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে। যার জন্য কারখানা বন্ধ আজ সেই সামাজিক দূরত্ব না থাকার জন্য দায়ীকে। আমি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে আমার পরিবারকে দেখার জন্য এই কারখানারই দায়িত্ব নিতে হবে।
ত্বোয়া-হা টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানার অ্যাডমিন অফিসার সোহেল বলেন, আসলে শ্রমিকরা একটু ভুল বুঝেছে। তারা নোটিশ না দেখেই আন্দোলন করছে। তাদের বেতন পরিশোধের তারিখ দেওয়া হয়েছে। তারিখ অনুযায়ী বেতন পরিশোধ করা হবে।
এ ব্যাপারে গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কেন্দ্রিয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক খাইরুল মামুন সিন্টু বলেন, শ্রমিকরা এই সংকটময় সময়ে কারখানা কর্তৃপক্ষকে কাছে না পেয়ে হতাশ। তারা আগের মতই সমন্বয়হীনতায় ভুগছেন। কারখানা কর্তৃপক্ষ এখনও বেতন প্রদানের সিদ্ধান্ত পর্যন্ত জানাতে পারে নি। যেখানে সরকারসহ সবাই শ্রমিকদের বেতন প্রদানের জন্য বলেছেন। কোনো সিদ্ধান্ত না পেয়ে তারা করোনা ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় ও কারখানার সামনে অবস্থান নিয়েছে। আমি কারখানা মালিকদের বলবো, তারা যদি শ্রমিকদের মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে বেতন দেওয়ার জন্য বা বেতন প্রদানের তারিখ মোবাইলে মেসেজ করে দেয় তাহলে শ্রমিকরা আশ্বস্ত হয়ে কারখানায় আসতো না। কিন্তু তারা সিদ্ধান্তেই পৌঁছতে পারে না। শ্রমিকদের করোনা ঝুঁকি থেকে বাঁচানোর জন্য হলেও বেতন প্রদান করা উচিৎ কারখানা মালিকদের।