শুভাকাঙ্ক্ষীদের বিভ্রান্তি দুর করতে এই লেখা:
দৃঢ় নেতৃত্ব সততা এবং আন্দোলন সংগ্রামের ভিতর দিয়ে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র শ্রমিকদের ভরসা ও আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়। নেতৃত্ব দক্ষতায় অল্প সময়ের মধ্যে তেজগাঁও, মিরপুর, উত্তরা, গাজীপুর, সাভার, আশুলিয়া, নারায়োনগঞ্জ, চট্রগ্রামে সংগঠন বিস্তার লাভ করে।
দেখা গেলো গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র শ্রমিকদের সকল আন্দলোনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেও শ্রমিক সংক্রান্ত সরকারি কোন কাজ বা মজুরি বোর্ডের মতো গুরুত্বর্পূণ কোন জায়গায় গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র কোন ভূমিকা রাখতে পারছেনা শুধুমাত্র নিবন্ধন না থাকার কারণে।
তখন পার্টির নেতৃত্ব নিবন্ধন করার পরার্মশ দেন, সেই মোতাবেক সম্মেলন করা হয় এবং উপস্থিত প্রতিনিধী সর্বসম্মতিক্রমে কন্দ্রেীয় কমিটিকে ক্ষমতা প্রদান করা হয় নিবন্ধনের ব্যবস্থা করার জন্য।
বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র নামে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা হয় কিন্তু রেজিস্ট্রার্স অব ট্রেড ইউনিয়ন আবেদন রিজেক্ট করে দেয়। রিজেক্টকৃত নামে দুই বার আবেদন করার সুযোগ না থাকায় তখন গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র নামে আবেদন করা হলেও আবারো রিজেক্ট হয়। তখন কেন্দ্রীয় কমিটি বসে সর্বসম্মতিক্রমে বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র নামে তৃতীয় বার আবেদন করা হয় তখন সিদ্ধান্ত ছিল নিবন্ধন পেলে আগের নামে ফিরে যাওয়া, আরো একটা কারন ছিল, তখন কথা উঠে- আন্দোলন করে সুয়েটারের শ্রমিকরা বেতন বাড়ে গার্মেন্টস শ্রমিকদের সুয়েটারের শ্রমিকদের পিসরেট বাড়ে না, আর সংগঠন তো গার্মেন্ট শ্রমিকদের সুয়েটার নাম নাই। তখন সাদেকুর রহমান শামিম প্রস্তাব করে সুয়েটার যুক্ত করতে, বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র নামে আবেদন করা হয় (তখন করতে পেরেছি কারন আমাদে মধ্যে কোন বিভক্তি ছিলনা কিন্তু বর্তমান নেতৃত্ব ব্যাক্তিস্বার্থ পদের লোভে সংগঠনের মধ্যে বিভক্তি তৈয়ার করেছে)। এবারো রেজিস্ট্রার্স অব ট্রেড ইউনিয়ন আবেদন রিজেক্ট করে দেয়।
তখন আমরা মামলা করি রেজিস্ট্রার্স অব ট্রেড ইউনিয়ন এর বিরুদ্ধে এবং সাত বছর মামলা চলার পর র্কোট আমাদের অনুকূলে রাই দেন।
”এই কয় বছরে সংগঠনরে মধ্যে তিন বার নেতৃত্বে পরিবর্তন হয়েছে গঠনতন্ত্র পরিবর্তন হয়েছে। গত সম্মেলনের মধ্য দিয়ে একটা দুর্বল নেতৃত্ব নির্বাচিত হয় পার্টির সিধান্তের নামে গণসংগঠনের উপর তা চাপিয়ে দেয়া হয় কাউন্সিলারদের মতের বাহিরে গিয়ে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়। তখন থেকে সংগঠনের মধ্যে বিভত্তি শুরু হয় কারন সংগঠন পরিচালনা করার মত দক্ষতা যোগ্যতা সাধারণ সম্পাদকের ছিলোনা। ব্যাক্তি স্বার্থ পদ ধরে রাখতে সংগঠনের মধ্যে গ্রুপিং বা বিভক্তি শুরু করে, কর্মীদের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে টাকার লোভ দেখিয়ে এলাকা গুলিতে গ্রুপিং সৃষ্টি করে এখন তা দৃশ্যমান হয়েছে। নেতাদের নামে নানা বদনাম ছড়াতে থাকে এবং যেখানে তাদের দৃষ্টি পড়েছে সেখানে সাংগঠন র্দূবল হয়ে পড়েছে,”উত্তরাতে চেষ্টা করেছে পারেনি সেখান কার সংগঠন এখন ঠিক আছে”।
তবে নিবন্ধন পাওয়ার মধ্যমে নতুন করে সংগঠতিত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়।
নিয়ম অনুযায়ী নিবন্ধন পাওয়ার পর (আবেদন করার পর থেকে যতগুলো পরর্বিতন হয়েছে ,কমিটি গঠনতন্ত্র তা সকল কছিু স্থগতি হয়ে যাব) রেজিস্ট্রার্স অব ট্রেড ইউনিয়ন র্কতৃক অনুমোদিত কমিটি এবং গঠনতন্ত্র বহাল থাকবে। তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সম্মেলন করা তার মধ্য দিয়ে পূর্বে যায়গায় ফিরে যেতে পারে যদি উপস্থিত কাউন্সিলররা চাই। কাউন্সিলর কারা হবে? যে সকল বসেকি ইউনয়িন নিয়ে নিবন্ধিত হয়েছে সেই সকল বেসিক ইউনিয়ন সদস্য। বেসিক ইউনিয়নের প্রতিনিধি, রেজিস্ট্রার্স অব ট্রেড ইউনিয়ন এর প্রতিনিধির উপস্থিতিতে জাতীয় কাউন্সিল করে গঠনতন্ত্র সংশোধন ও নাম পরিবর্তন করা যাবে।
***
তখন সংকট নতুন মাত্রা পায় নিয়ম করে সম্মেলন হলে অনেকেই বাদ পড়ে যাবে, তখন পার্টির সাবেক নেতা চাপ দিতে থাকে নির্বাচন না করে বে-আইনি ভাবে রেজিস্ট্রার্স অব ট্রেড ইউনিয়নকে ম্যানেজ করে বর্তমান কমিটি দেখাতে।
***
দ্বিতীয় সমস্যা দেখা দিল-যে পাঁচটি বেসিক ইউনিয়ন নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা হয়েছিল। তার কয়কেটি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক নেতা কর্মী এলাকা ছেড়ে চলে গেছে। সেই কারনে সাথে সাথে জাতীয় কাউন্সলি করা সম্ভব হয়নি।
***
ধীরে চলার আর এটা কারন ছিল পার্টির নেতাদের চাপ ছিল যতখন সম্মেলন না হচ্ছে ততখন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র কার্যক্রম না করে, নাম পরিবর্তন করে শুরু কর (নিবন্ধন পাওয়ার পর সে সুযোগ থাকেনা তবুও) সেই ভবেই চলছিল, কিন্তু তাদের মুখের কথা মনের কথার মধ্যে মিল নাই বুঝতে পারিনি কমিউনিস্টরা ছলচাতুরী করতে পারে ভাবতে পারিনি।
তবে ইতিমধ্যে নতুন এগারোটা বেসিক ইউনিয়ন গঠন করা হলে বাধা দুর হয় এবং কেন্দ্রী কমিটির মিটিং করে জাতীয় কাউন্সিল করার প্রস্তুতি নিতে নিতেই করোনা মহামারী কারণে সরকার ট্রেড ইউনিয়ন র্কাযক্রম বন্ধ করে দেয়। সেই কারনে আর জাতীয় কাউন্সিল করা সম্ভব হয়নি।
ট্রেড ইউনিয়ন ট্রডে ইউনয়িন র্কাযক্রমরে উপর থেকে বিধি নিষেধ উঠে গেলেও বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিংএ ভোটের মাধ্যমে জাতীয় কাউন্সলি করার সদ্ধিান্ত হয়। ভোটে হেরে গিয়ে ততখনাত গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র কেন্দ্রী কমিটির মিটিং ডাকে, এগারো জনের উপস্থিতিতে মিটিং করে সিধান্ত নেয় ১৮ তারিখে সম্মেলন করার এবং সংগঠনকে ভাঙ্গার ব্যাবস্থা করছেনে আলাদা করেছেন, সম্মেলন করা তারি প্রমাণ বহন করে।
প্রশ্ন উঠতে আমরা কেন গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র সে মিটিংএ গেলেন না গেলে তারা সম্মেলন করতে পারতোনা, কথা খুবি সঠিক।
কেন গেলাম না?
১। যে ভাবেই হোক সংগঠন দুইটা হয়েছে, আমাদের সিধান্ত ছিল জাতীয় কাউন্সিল করে গঠনতন্ত্র সংধোন করে আমরা গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র নামে ফিরে যাবো। তা হলে তো এই সম্মেলনের প্রয়োজন ছিল না।
২। শ্রম আইনের ২৯৯ ধারাই: কোন ব্যাক্তি অ-রেজিষ্টিকৃত অথবা রেজিস্ট্রি বাতি হইয়েছে এমন কোন ট্রেড ইউনিয়ন , রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত কোন কর্মকান্ড ব্যাতিত, অন্য কোন কর্মকান্ডে অংশগ্রহন করলে অথবা কোন ব্যাক্তিকে উক্তরূপ কর্মকান্ডে অংশ গ্রহনে জন্য উৎসাহিত বা প্ররোচিত করলে, অথবা উক্তরূপ কোন ট্রেড ইউনিয়নের তহবিলের জন্য সদস্য চাঁদা ব্যতীত অন্য কোন চাঁদা আদায় করলে, তিন মাস পযন্ত কারাদন্ডে, অথবা দুই হাজার পযন্ত অর্থ দন্ডে অথবা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।
৩। ধারা: ৩০০-কোন ব্যাক্তি একই সময়ে একাধিক ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য হইলে বা থাকলে, তিন মাস পর্যন্ত কারাদন্ডে, অথবা দুই হাজার পর্যন্ত অর্থ দন্ডে অথবা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।
সেই কারনে দুইটা সংগঠন করার সুযোগ নায়’ রেজিস্ট্রেশন মানলে আইন মেনে চলতে হবে, আইনের বাহিরে যাবার কোন সুযোগ নাই।
আমরা সেই ভাবে সংগঠকে গুছানোর কাজ করছিলাম তাদের সুযোগ ছিল কাউন্সিলের মাধ্যমে নির্বাচিত হওয়ার। সে সুযোগ না নিয়ে সংগঠনকে ভাঙ্গনে দিকে ঠেলে দিলেন।
আর একটা আশঙ্কা কাজ করে এতে মালিকদের কোন কারসাজি আছে কিনা খতিয়ে দেখতে হবে।
আশাকরি কিছুটা হলেও বিভ্রান্তি দুর করতে পেরেছি।
বেসিক ইউনিয়ন এর প্রতিনিধি নিয়ে নিয়ম মেনে জাতীয় কাউন্সিল হবে। সে সময় গঠনতন্ত্র সংশোধন করে যে সকল প্রতিবন্ধকতা আছে দুর করতে হবে, নাম পরিবর্তন করে আগের নামেই ফিরে যেতে হবে।
লিখেছেনঃ ইদ্রিস আলী, সভাপতি, বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র