চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধিসহ ন্যায্য দাবিসমুহ মেনে নেওয়ার আহবান

নিত্যপণ্যের দাম কমাও, ও.এম.এস নয় ভর্তুকী মুল্যে শ্রমজীবীদের রেশন দাও, সকল শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি পুণঃনির্ধারণ কর, চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধিসহ ন্যায্য দাবিসমুহ মেনে নেওয়ার আহবান

————————————————-

নিত্যপণ্যের দাম কমানো, শ্রমজীবীদের জন্য ভর্তুকী মুল্যে রেশন প্রদান এবং নিত্যপণ্যের বাজার মূল্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে সকল শ্রমিক কর্মচারীদের মজুরি পুণঃনির্ধারণের দাবি জানিয়েছে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদ। স্কপ যুগ্ম সমন্বয়ক চৌধুরী আশিকুল আলম ও আহসান হাবিব বুলবুল এবং স্কপ নেতা শহিদুল্লাহ চৌধুরী, মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, আনোয়ার হোসেন, শাহ মোহাম্মদ জাফর, রাজেকুজ্জামান রতন, সাইফুজ্জামান বাদশা, আব্দুল কাদের হাওলাদার, কামরুল আহসান, হাবিবুল্লাহ, শামীম আরা, ডাঃ ওয়াজেদুল ইসলাম খান, নঈমুল আহসান জুয়েল, শাকীল আক্তার চৌধুরী, বাদল খান, আমিরুল হক আমিন, রিপন চৌধুরী, নুরুল আমিন প্রমুখ

নেতৃবৃন্দ যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ২০২০ সালে করোনা সংক্রমনের সময় থেকেই সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের কর্মসংস্থান এবং আয়ের পরিমাণ কমেছে তার বিপরীতে খাদ্যপণ্যসহ জীবনযাপনের সকল উপকরণের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে শ্রমজীবী মানুষের জীবনমানের অবনতি হয়েছে।

গত ১৫ জুলাই ২০২২ জাতিসংঘের ৫ টি সংস্থার গবেষণা প্রতিবেদনে বলেছে দেশের জনসংখ্যার ৭৩ শতাংশ প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবার কেনার সামর্থ্য রাখেনা এবং ৩২ শতাংশ মানুষ খাদ্য অনিশ্চয়তার মধ্যে জীবনযাপন করছে। এই অবস্থায় শ্রমিক- কর্মচারীদের মজুরি বৃদ্ধির কোনো উদ্যোগ নেওয়া না হলেও আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে জ্বালানি তেলের মত মৌলিক পণ্যের দাম প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে, অর্থপাচারকারীদের প্রতিরোধের ব্যর্থতায় ডলারের দাম বেড়েছে, অযৌক্তিক মাত্রায় পরিবহন ভাড়া বেড়েছে। আর জ্বালানি তেল ও ডলারের মূল্য এবং পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধির অজুহাতে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট চাল, ডাল, তেল, সব্জি, ডিমসহ প্রায় প্রতিটি নিত্যপণ্যের মূল্য একক প্রতি ১৫ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে। সরকার বাজার নিয়ন্ত্রেণে ব্যর্থ হয়েছে উপরোন্ত জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে ব্যবসায়ীদেও নিত্যপণ্যের মূল্য আরো বাড়ানোর সুযোগ করে দিয়েছে। শ্রমজীবী মানুষের ক্রয় ক্ষমতা করোনা পুর্ববর্তী অবস্থানের তুলনায় অর্ধেকের নিচে নেমে গেছে। তাদের মধ্যে চুড়ান্ত খাদ্য অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে যা এস.ডি.জি বা মধ্যম আয়ের রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার ঘোষণার সম্পুর্ণ বিপরীত এবং অগ্রহণযোগ্য।

নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) নিত্যপণ্যের বাজারমূল্য বিবেচনায় ২০২০ সাল থেকে জাতীয় নি¤œতম মজুরি ২০ হাজার টাকা ঘোষণা করার দাবি জানিয়ে আসছে। অবিলম্বে জাতীয় নি¤œতম মজুরি ঘোষণা এবং মজুরি বোর্ড গঠন করে সকল শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি পুণঃনির্ধারণ করতে হবে। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ও. এম. এস বা টিসিবি’র ট্রাক সেল কার্যক্রম থেকে পণ্য সংগ্রহ করতে লাইনে দাঁড়িয়ে সময় পার হওয়ায় একজন শ্রমজীবী মানুষ অর্থ উপার্জনের কাজে যেতে পারে না। উপার্জন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ও.এম.এস এর সাশ্রয় কার্যত কোনো উপকার করেনা। তাই ও. এম.এস বা টিসিবি’র ট্রাক সেল এর পরিবর্তে শ্রমজীবীদের জন্য ভর্তুকী মূল্যে রেশন চালু করতে হবে।

নেতৃবৃন্দ চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি, ছুটির বৈষম্য নিরষণসহ ন্যায্য দাবির চলমান আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে এবং দাবিসমুহ মেনে নেওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, ১২০ টাকা মজুরি নিত্যপণ্যের বর্তমান বাজারমূল্যে একজন মানুষের পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজন পুরণ করেনা। ফলে কাজ করেও শ্রমজীবী পরিবারের পুষ্টিকর খাবারের নিশ্চয়তা থাকবেনা তা অমানবিক এবং কোনো ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাছাড়া দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ভারসাম্য রক্ষা করতেও শ্রমিকের মজুরি উৎপাদিত পণ্যের মূল্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত।

শেয়ার করুনঃ