স্থায়ী মজুরি কমিশন গঠন করে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা ঘোষণার দাবি

বুধবার (২৭ জুলাই) রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে আয়োজিত এক সমাবেশে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি)

অবিলম্বে স্থায়ী মজুরি কমিশন গঠন করে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা ঘোষণার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি)। এছাড়াও মুদ্রাস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে সংগতি রেখে প্রতিবছর মহার্ঘ ভাতা প্রদানের দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে অতীতের ন্যায় ভর্তুকি মূল্যে রেশনিং প্রথা চালুরও দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

বুধবার (২৭ জুলাই) রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে আয়োজিত এক সমাবেশে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি) এই দাবি জানায়।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের (টিইউসি) সভাপতি সহিদুল্লাহ চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন টিইউসির সাধারণ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান, সহসভাপতি মাহবুব আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, দপ্তর সম্পাদক সাহিদা পারভীন শিখা, অর্থ সম্পাদক কাজী রুহুল আমীন, কেন্দ্রীয় নেতা সাদেকুর রহমান শামীম প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশের শ্রমজীবী-মেহনতি মানুষসহ নিম্নআয়ের সাধারণ জনগণ এক সংকটময় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে মুক্তবাজার অর্থনীতির দাপট এবং মুনাফাখোর ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট কারসাজিতে দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান ঊধ্র্বগতি বর্তমানে এমন অবস্থায় এসে পৌঁছেছে যে শ্রমিক-কর্মচারী ও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। একদিকে শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি এক টাকাও বাড়েনি, অন্যদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রসহ জীবন ধারণ ব্যয় বেড়েছে কয়েকগুণ।

বক্তারা জানান, এ পরিস্থিতিতে শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রকৃত মজুরি কমে গিয়ে তাদেরকে এক অসহায় অবস্থার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। দেশের শ্রমিক-কর্মচারীরা আইএলও কনভেনশন ৮৭ ও ৯৮ অনুযায়ী অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকারসহ অন্যান্য ন্যায়সঙ্গত অধিকার, সামাজিক মর্যাদা ও সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত। রানা প্লাজা, তাজরীন গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন কলকারখানার ভবন ধস, অগ্নিকাণ্ড ও অন্যান্য দুর্ঘটনায় হাজার হাজার শ্রমিক-কর্মচারী হতাহত হলেও তাদের কর্মস্থলের নিরাপত্তা আজও প্রতিষ্ঠিত হয়নি।

এ সময় শ্রমিক নেতারা বাজার দর, শ্রমিকদের উৎপাদনশীলতা, শিল্পের সক্ষমতা, মাথাপিছু জাতীয় আয় বিবেচনায় জাতীয় ন্যূনতম মজুরি কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ ও প্রতিবছর বাজার দরের সঙ্গে সংগতি রেখে মহার্ঘ ভাতা প্রদানের দাবি জানান। এছাড়াও পরিবেশ রক্ষার্থে বন্ধ থাকা পাটকল চালু, আইএলও কনভেনশন অনুযায়ী শ্রম আইন সংশোধনের দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে শ্রমিক-কর্মচারী ও নিম্নআয়ের মানুষদের জন্য রেশন প্রথার মাধ্যমে সস্তা ও সুলভ মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি- যেমন চাল, ডাল, তেল, চিনি সরবরাহ করতে সরকারের প্রতি দাবি জানান তারা।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

শেয়ার করুনঃ