২০১৩ সালের এই এপ্রিল মাসের ২৩ তারিখ সাভার রানা প্লাজায় ফাটল ধরেছিল। রানাপ্লাজায় ৫টি গার্মেন্ট কারখানায় ৫০০০ শ্রমিক কাজ করতো। কারখানা ফাটলের কারনে শ্রমিকরা ২৪ এপ্রিল কাজে যোগদান করতে চায়নি। গার্মেন্ট মালিকরা শ্রমিকদের চাকুরী চ্যুত করার ভয় দেখিয়ে জোর পূর্বক শ্রমিকদের কারখানায় প্রবেশ করানো হয়। তার পর রানাপ্লাজায় কি ঘটেছিল সেটা আমরা সবাই জানি। ১১৩৪ শ্রমিকের প্রন ও হাজার হাজার শ্রমিকের পঙ্গুত্ব বরণ।
২০১২ সালে আশুলিয়ার নিশ্চিন্ত পুর অবস্থিত তাজরিন গার্মেন্ট এ ১১৪ জন শ্রমিককে পুড়িয়ে হত্যা এবং হাজার হাজার শ্রমিক পঙ্গুত্ব বরণ সেটাও আমরা কেও ভুলে যায়নি।
বারবার এই পোশাক শ্রমিকদের মালিকদের মুনাফার বলি হতে হচ্ছে, এটা আর নতুন কি?
করোনা ভাইরাসের কারণে দেশের সব কিছু লকডাউন করে রাখা হচ্ছে, দোকান, মার্কেট সরকারী-বেসরকারি অফিস।
একসাথে কয়েকজন রাস্তায় বের হলেই পুলিশের হয়রানীর সিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
করোনা ভাইরাসের ঝুঁকির কারণে গত ২৭ মার্চ থেকে গার্মেন্ট কারখানা বন্ধ রাখা হয়।শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকদের আবাসন ব্যবস্থা ভালো না হওয়ার কারণে অনেকেই সে সময় গ্রামের বাড়ী চলে গিয়েছিল।
শ্রমিকদের ধারণা ছিল, যেহেতু সরকার অফিস আদালত, গণপরিবহনসহ সব কিছু ১১ তারিখ পর্যন্ত বন্ধ, সেহেতু গার্মেন্ট কারখানা বন্ধ থাকবে।
কিছু গার্মেন্ট কারখানা এরি মধ্য বন্ধের মেয়াদ বাড়িয়েছেন কিন্তু বেশির ভাগ গার্মেন্ট কারখানা আগামী কাল ৫ এপ্রিল খোলা।কিছু গার্মেন্ট মালিক বন্ধের সুযোগ নিয়ে শ্রমিক ছাঁটায় করছেন।
আমার কথা হলো ৫ এপ্রিলের পর কি দেশে করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি কমে আসছে, যে গার্মেন্ট কারখানা চালু করা হচ্ছে?
যদি তাই হয় তাহলে আজ থেকে দেশের গণপরিবহণ চালু করা হলোনা কেন? চাকুরী হারানোর ভয়ে শ্রমিকরা জিবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা আজ রওনা হয়েছেন ঢাকার পথে।
নাকি গার্মেন্ট মালিকদের ষড়যন্ত্র, ৫ এপ্রিল শ্রমিকরা গণপরিবহনের অভাবে কারখানায় সময় মত উপস্থিত থাকতে পারবেনা, যারা সময় মত কারখানায় উপস্থিত থাকতে পারবেনা তাদের চাকুরী চ্যুত করা হবে?
গার্মেন্ট শ্রমিকরা কারখানার ভিতর যে ভাবে গাদাগাদি হয়ে কাজ করে তাতে যদি করোনা ভাইরাসের সংক্রামণ এক বার শুরু হয় তাহলে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যাবে।
লিখেছেনঃ খাইরুল মামুন মিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র।