তাঁর চোট, তাঁর ফর্মহীনতা—এসবের সঙ্গে নেইমারের উদ্দাম জীবনযাপন মিলিয়ে তাঁর ওপর পিএসজির কাতারি মালিকেরা যে খুশি ছিলেন না, তা সর্বজনবিদিতই। এই মৌসুমে কিলিয়ান এমবাপ্পের সঙ্গে পিএসজির চুক্তি নবায়নের পর নেইমারকে পিএসজির ছেড়ে দিতে চাওয়ার গুঞ্জন আরও জোর পেয়েছে। ক্লাবের নতুন ফুটবল উপদেষ্টা লুইস কাম্পোসও নেইমারকে চান না। কদিন আগে পিএসজি চেয়ারম্যান নাসের আল-খেলাইফিকে এ নিয়ে প্রশ্ন হলে তাঁর উত্তরেও ধোঁয়াশাই ছিল, ‘গ্রীষ্মে নেইমারের সম্ভাব্য দলবদল? আপনাদের শুধু এতটুকুই বলতে পারি যে আমরা সব খেলোয়াড়ের কাছে এটাই চাই যাতে তারা এই মৌসুমে যেমন খেলেছে, তার চেয়ে বেশি উজাড় করে দিয়ে খেলে। সবাইকে শতভাগ দিতে হবে।’
ক্লাব চেয়ারম্যানের এই কথায় অসন্তুষ্ট নেইমার এখন নিজেই ক্লাব ছাড়তে চান বলে খবর আরএমসি স্পোর্তের। ওয়েবসাইটটি লিখেছে, কাছের মানুষের কাছে নেইমার কয়েকবারই বলেছেন, একটা ক্লাবে ভালো করতে হলে তাঁর ‘ক্লাব তাঁকে ভালোবাসে, চায়’—এই অনুভূতিটা দরকার। কিন্তু পিএসজিতে তো সেটা নেইমার পাচ্ছেন না।
যদিও নেইমারের দলবদল চাইলেই হয়ে যাবে না বলেও জানাচ্ছে আরএমসি স্পোর্ত। এর সবচেয়ে বড় কারণ, পিএসজিতে নেইমারের সর্বশেষ চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, চুক্তিটি ২০২৫ সাল পর্যন্ত থাকলেও গোপন শর্ত সাপেক্ষে সেটির মেয়াদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে ২০২৭ সাল পর্যন্ত থাকবে। সে কারণে নেইমারকে কিনতে আগ্রহী ক্লাবকে চড়া মূল্যই দিতে হবে। নেইমারের আকাশছোঁয়া বেতন দেওয়ার সামর্থ্যই–বা এ সময়ের ফুটবলে কটি ক্লাবের আছে!
৩০ বছর ব্রাজিলিয়ান ব্যক্তিগতভাবে চান বার্সেলোনায়ই ফিরতে। কিন্তু আর্থিকভাবে রীতিমতো পঙ্গু হয়ে পড়া বার্সেলোনার সে সামর্থ্য কোথায়? সে ক্ষেত্রে ইংল্যান্ডের তিন ক্লাব চেলসি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও নতুন করে সৌদি আরবের মালিকানায় যাওয়া ক্লাব নিউক্যাসল ইউনাইটেড নেইমারের ব্যাপারে আগ্রহী বলে শোনা যায়। কিন্তু নেইমার নিজেই অনেকবার জানিয়েছেন, তিনি ইংল্যান্ডে কখনো খেলতে যেতে চান না।
এর সঙ্গে যোগ করে নিন, এবার বিশ্বকাপের বছর। ২০২৬ বিশ্বকাপের সময় নেইমারের বয়স হয়ে যাবে ৩৪, তত দিনে আর কতটা প্রভাব ফেলতে পারবেন নেইমার, তা নিয়ে সংশয় আছে। সে ক্ষেত্রে কাতার বিশ্বকাপই নেইমারের নিজের মতো করে আলো ছড়িয়ে বিশ্বকাপ জয়ের শেষ সুযোগ। এ বছর নেইমারের চোখও আপাতত সেদিকে। এমন সময়ে তাই ক্লাব ছাড়তে চাইলেও কোন ক্লাবে যাবেন, সেখানে মানিয়ে নেওয়ার চ্যালেঞ্জ, আবহাওয়ার প্রভাব—সবকিছুই বিবেচনায় নিতে হবে নেইমারকে।