সীতাকুন্ডে অবস্থিত বি.এম. কন্টেইনার ডিপোর মালিক, কর্মক্ষেত্র নিরাপদ করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট সরকারী কর্মকর্তাসহ কন্টেইনার ডিপোতে কমপক্ষে ৪৭ শ্রমিক-কর্মচারী-উদ্ধারকর্মী হত্যা এবং ৪ শতাধিক মানুষ মারাত্মক আহত হওয়ার জন্য দায়িদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) আজ ১২ জুন, সকাল ১১টায়, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসুচী পালন করে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি / তারিখঃ ১২.০৬.২০২২
কর্মক্ষেত্র নিরাপদ করার ব্যর্থতায় সংশ্লিষ্ট সরকারী কর্মকর্তাদের শাস্তি নিশ্চিত কর
আইওয়াশ নয় বি.এম. কন্টেইনার ডিপোর মালিকসহ দায়িদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার কর, সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত কর
সীতাকুন্ডে অবস্থিত বি.এম. কন্টেইনার ডিপোর মালিক, কর্মক্ষেত্র নিরাপদ করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট সরকারী কর্মকর্তাসহ কন্টেইনার ডিপোতে কমপক্ষে ৪৭ শ্রমিক-কর্মচারী-উদ্ধারকর্মী হত্যা এবং ৪ শতাধিক মানুষ মারাত্মক আহত হওয়ার জন্য দায়িদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) আজ ১২ জুন, সকাল ১১টায়, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসুচী পালন করে।
স্কপ যুগ্ম সমন্বয়ক চৌধুরী আশিকুল আলম এর সভাপত্বিতে এবং আহসান হাবিব বুলবুল এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে উপস্থিত ও বক্তব্য রাখেন স্কপ নেতা আনোয়ার হোসেন, সাইফুজ্জামান বাদশা, কামরুল আহসান, শামীম আরা, মাহবুবুল আলম, বাদল খান, শাকীল আক্তার চৌধুরী, নুরুল আমিন, আব্দুল ওয়াহেদ প্রমুখ।
সামবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, এটি খুব সুস্পষ্ট ভাবে প্রতিয়মান যে, সরকার কর্মক্ষেত্র নিরাপদ করতে যথেষ্ট আন্তরিক নয়। বিভিন্ন শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক এবং রাষ্ট্রের কর্মকর্তারা মুনাফা আর উপরি আয়ের ধান্দায় জীবিকার তাগিদে আসা শ্রমিকদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে এতটুকু দ্বিধাবোধ করছেনা। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বেতন পাওয়া সরকারী কর্মকর্তাদের ন্যূনতম দায়িত্ববোধ আর জবাবদিহিতা থাকলে এভাবে নির্মম মৃত্যুর মিছিল অব্যাহত থাকতনা। নেতৃবৃন্দ বলেন, ১৯৯০ সালের সারাকা গার্মেন্টেসে অগ্নিকান্ডে ৩২ জন শ্রমিক নিহত হওয়ার মধ্যে দিয়ে কর্মক্ষেত্রে মৃত্যুর যে মিছিল শুরু হয়েছিল তারপর আড়াই শতাধিক ঘটনা ঘটেছে প্রতিটি ঘটনার প্রেক্ষিতে একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কোনো তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি, দায়িদের চিহ্নিত বা শাস্তি দেওয়া হয়নি। নেতৃবৃন্দ আশংকা প্রকাশ করেন, অতিতের মতই বি.এম কন্টেইনার ডিপোর হত্যাকান্ডের ঘটনাটিও চাপা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। অনুমোদন ছাড়া ক্যমিকেল সংরক্ষণ ও তথ্য গোপন করার প্রদান দায় যার সেই মালিককে এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি, ৮ জন ছাপোষা কর্মচারীর নামে মামলা করা হয়েছে। নিয়মিত পরিদর্শন করে কর্মক্ষেত্র কে নিরাপদ করা যাদের দায়িত্ব ছিল, কর্তব্য অবহেলার দায় যারা এড়াতে পারেননা সেই ব্যক্তিরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। দায়িদের তদন্ত কমিটি কাদের দায় চিহ্নিত করবেন? প্রকৃত অপরাধিদের আড়াল করে ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্ণীতি, অনিয়ম অব্যাহত রাখার জন্যই একে অপরের ঘাড়ে দোষ চাপানো আর তদন্ত নামের পুরানো খেলা শুরু করা হয়েছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, অনুমোদন না নিয়ে, দায়িত্বপ্রাপ্তদের চোখ ফাঁকি দিয়ে ২০ ফিট লম্বা ২৬ টি কন্টেইনারে কিংবা আলাদা সেড নির্মাণ করে ক্যামিকেল সংরক্ষণ করা কিভাবে সম্ভব হলো? শতশত শ্রমজীবী মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ীদের শাস্তি না হওয়া দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতির নজির কে শক্তিশালী করছে। আইন ও বিচার টাকার অধিন, সমঅধিকার বা নিরাপদে বাঁচার অধিকারের বক্তব্য ভেক বলে প্রমাণ করছে। সরকার বা রাষ্ট্রের এই আচরণ ন্যায়বিচার ভিত্তিক স্থিতিশিল সমাজকাঠামো গড়ে তোলার ইচ্ছাকে প্রকাশ করেনা। নেতৃবৃন্দ, বি.এম. কন্টেইনার ডিপোর হত্যাকান্ডের জন্য দায়িদের রক্ষা করার প্রচেষ্টা সহ্য করা হবেনা বলে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন এবং নিহত ও আহতদের আই.এল.ও কনভেনশন ১২১ অনুসারে আজীবন আয়ের মানদন্ডে ক্ষতিপুরণ প্রদানের আহবান জানিয়ে বলেন, কর্মক্ষেত্র কে নিরাপদ করার সরকারের সদিচ্ছা থাকলে কর্মক্ষেত্রে অবহেলাজনিত দুর্ঘটনায় ক্ষতিপুরণ এবং শাস্তি সংক্রান্ত ধারাসহ স্কপের সুপারিশের আলোকে শ্রম আইন সংশোধন করবে।