আজ ৫ জুন ২০২২, রবিবার বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার এবং সাধারণ সম্পাদক জুলহাসনাইন বাবু এক যুক্ত বিবৃতিতে দ্রব্য মূল্য কমাও নইলে মজুরি বাড়াও দাবিতে মিরপুরে পোশাক শ্রমিকদের গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমনে পুলিশের বেপরয়া লাটিচার্জ, টিয়ার শেল নিক্ষেপসহ নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানান। তাঁরা মিরপুরের শ্রমিকদের আন্দোলনের সাথে সংহতি ও একাত্মতা প্রকাশ করেন। নেতৃবৃন্দ বলেন গতকালও শ্রমিকদের উপর হামলা হয়। আজ সকালে ডিউটির সময় থেকে -ই মিরপুর ১০ নম্বর, ১৪ নম্বর এবং পল্লবী এলাকায় সড়ক অবরোধ করে শ্রমিকরা আবারো মজুরি বৃদ্ধির যে দাবি তুলেছে সেটিকে যুক্তি সঙ্গত বলে অভিহিত করেন নেতৃবৃন্দ।
তারা বলেন, তেল, চাল-ডালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির ফলে শ্রমিকরা দিশেহারা অবস্থায় মাঠে নামতে বাধ্য হয়েছে। বর্তমানে বাজারে তেলের দাম ২১০ থেকে ২২০, চালের দাম ১০ থেকে ২০ টাকা হারে বিভিন্ন জায়গায় বৃদ্ধি পেয়েছে। সিলিন্ডার গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদ্যুতের দামও বৃদ্ধির প্রস্তাবনা আসছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে ২০১৮ তে নির্ধারিত পোশাক শ্রমিকদের ৮ হাজার টাকা বেতনে বেঁচে থাকা দায়। বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতিসহ ক্রিয়াশীল সকল সংগঠন ও ট্রেড ইউনিয়নসমূহ মজুরি বৃদ্ধির দাবি করে আসছে ২০২১ সাল থেকে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে মজুরি ২০ হাজার টাকায় বৃদ্ধির দাবির গুরুত্ব সামনে এসেছে। কেবল পোশাক শ্রমিক নয় সকল সেক্টরের শ্রমিকদের সহ জাতীয় ন্যুনতম মজুরি ঘোষনার দাবি জানান গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির নেতৃবৃন্দ।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে মজুরি বোর্ড গঠন করে পোশাক খাতের শ্রমিকদের মজুরি পুননির্ধারণের উদ্যোগ নিবার আহবান জানান। যতক্ষণ পর্যন্ত সরকার ও মালিকদের পক্ষ থেকে এ উদ্যোগ গ্রহণ করা না হচ্ছে শুধু মিরপুরের শ্রমিকদের মতো সাভার, আশুলিয়া, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, ময়মসিংহ, কুমিল্লাসহ অঞ্চলের শ্রমিকরা পেটের দায়ে রাস্তায় নামতে বাধ্য হবেন। পুলিশ দিয়ে, লাটিচার্য করে, টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে, মামলা দিয়ে, গ্রেফতার করে শ্রমিক আন্দোলন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। পেটের ক্ষুধা কোন বাধাই মানবে না।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, বর্তমান ভোটবিহীন সরকার সিন্ডিকেটের সহযোগী। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ না করে ব্যবসায়ীদের মুনাফা বৃদ্ধির আয়োজন করছে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি সীমিত আয়ের মধ্যবিত্তের জীবনকেও বিপর্যস্ত করছে। অন্যদিকে শ্রমিকদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। ঘুরে দাঁড়ানো ছাড়া তাদের সামনে আর কোন পথ খোলা নেই। সরকার ও মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন অবিলম্বে নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠন করে মজুরি পুনর্নির্ধারণ করতে হবে এবং নতুন মজুরি নির্ধারিত না হওয়া পর্যন্ত শতকরা ৫০ ভাগ মহার্ঘভাতা প্রদান করতে হবে। একইসাথে নেতৃবৃন্দ বলেন গ্রেফতারকৃত শ্রমিকদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং আহত শ্রমিকদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।