বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধিতে মানুষ দিশাহারা। বিনা ভোটে তথাকথিত নির্বাচিত সরকারের দুঃশাসনে অতিষ্ঠ সাধারণ জনগণ কম খেয়ে বেঁচে থাকার পথের সন্ধান করছে। আর একদল মানুষ টাকার পাহাড় গড়ে তুলছে। ওই টাকা পাচার করে বিদেশে সেকেন্ড হোম গড়ে তুলছে।
রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তিভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে এই আলোচনা সভা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন।
সভায় বক্তারা বলেন, জনগণের ঐক্য জোরদার করে চলমান দুঃশাসন অবসান ঘটিয়ে ব্যবস্থা বদলের সংগ্রাম জোরদার না করতে পারলে এবং বাম গণতান্ত্রিক শক্তিকে ক্ষমতায় না আনতে পারলে, মানুষের স্বার্থ রক্ষা করা যাবে না। বরং দুঃশাসন চলবে। এক দুঃশাসনের পরিবর্তে আরেক দুঃশাসন আসবে। মানুষের মুক্তি আসবে না।
আলোচনা সভায় ঘোষণা দেওয়া হয়, মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে, ‘দুঃশাসনের’ অবসানে সিপিবি ১০ থেকে ১৬ মার্চ দেশব্যাপী সমাবেশ বিক্ষোভ করবে। এরপর বামপন্থী দল, ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়ে প্রয়োজনে হরতালের কর্মসূচি দেবে।
আলোচনা সভায় বক্তারা কমিউনিস্ট পার্টির লড়াই-সংগ্রাম-ঐতিহ্য ও অর্জনের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, ইতিহাসে কমিউনিস্ট পার্টির ভূমিকা উজ্জ্বল ও বর্ণিল। তেভাগা, নানকার, টংকসহ নানা কৃষক আন্দোলন, শ্রমিক আন্দোলনের পাশাপাশি সিপিবি ছাত্র ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন সংগঠিত করেছে। এ দেশের ঐতিহ্যবাহী গণসংগঠনগুলো প্রতিষ্ঠার পেছনে কমিউনিস্ট পার্টির ভূমিকাই মুখ্য। কমিউনিস্ট পার্টির নেতা-কর্মীদের ওপর বারবার হত্যা, নির্যাতন, জেল-জুলুম-হুলিয়ার খড়্গ নেমে এসেছে। কয়েক দফায় পার্টিকে বেআইনি করা হয়েছে। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী হাজার হাজার কমিউনিস্টকে দেশত্যাগে বাধ্য করেছে।
আলোচনা সভার আগে সিপিবির ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে একটি বর্ণাঢ্য লাল পতাকার মিছিল নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ ছাড়া সকাল ৮টায় দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সারা দেশে পার্টির শাখাগুলো যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালন করে।
আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন সিপিবির সাবেক সভাপতি, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাবেক সভাপতি সহিদুল্লাহ চৌধুরী, মনজুরুল আহসান খান ও সাবেক উপদেষ্টা শাহাদাত হোসেন, সহসাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, কেন্দ্রীয় নেতা ও ঢাকা উত্তরের সভাপতি সাজেদুল হক, কেন্দ্রীয় নেতা ও ঢাকা দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার।