দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, ঘুষ-দুর্নীতি-লুটপাট বন্ধ ও ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র নিশ্চিত করার দাবিতে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ধামসোনা ইউনিয়ন শাখার উদ্যোগে মানব বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
ধামসোনা ইউনিয়ন শাখার সম্পাদক সাইফুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে আজ ০১ অক্টোবর ২০২১ বিকাল ৫টায় আশুলিয়া’র বাইপাইলে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিহ হয়। বক্তব্য রাখেন গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রে’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শ্রমিকনেতা ইদ্রিস আলী, খাইরুল মামুন মিন্টু, মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, আব্দুল মজিদ, নবীয়াল ফকীর, আলতাব হোসেন, মামুন দেওয়ান।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, করোনাকালে লাখ লাখ মানুষ কাজ হারিয়েছে। সত্তর শতাংশ মানুষের আয় কমে গেছে। নতুন করে আড়াই কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাওয়ায় এখন দেশে পাঁচ কোটির বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে। অপরদিকে চাল-ডাল-তেল-লবণ-চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী। ফলে মানুষের জীবন আজ দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। করোনাকালে মানুষের দৈনন্দিন জীবন ধারণ কঠোর থেকে কঠোরতর হয়ে উঠেছে।
বক্তারা বলেন, বর্তমান সময়ে দেশে ঘুষ-দুর্নীতি-লুটপাট সকল সময়ের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। করোনাকালে হাসপাতালগুলোতে দুর্নীতি সকল সীমা অতিক্রম করেছে। করোনাকালে মানুষের আয় যখন কমছে তখন লুটপাটের মাধ্যমে ১১হাজার ৬৪৭ জন নতুন কোটিপতির জন্ম হয়েছে। প্রতি বছর দেশ থেকে সত্তর হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এ টাকা বিিেনয়োগ করে দেশে প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যেত ফলশ্রæতিতে দেশে বেকারত্ব হ্রাস পেত। তিনি বলেন, শেয়ারবাজার লুট, ই-কমার্স নামে হায়হায় কোম্পানি মানুষের সঞ্চয় লুটে নিচ্ছে। ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে লুটপাট করে দেশের প্রবৃদ্ধির প্রায় পুরোটাই লুটেরা শাসকরা আত্মসাৎ করে নিচ্ছে। কমরেড সেলিম আরো বলেন, লুটপাট টিকিয়ে রাখতে লুটেরা ধনিকশ্রেণি মানুষের বাক-স্বাধীনতা, ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র খর্ব করছে। দীর্ঘদিন ধরে মানুষ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পুলিশের খবরদারি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে মানুষের মত প্রকাশ ও গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেয়া হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় সংস্থাসমূহের প্রতিহিংসায় সাধারণ মানুষ নাজেহাল হচ্ছে। কমরেড সেলিম দেশবাসীকে আহবান জানিয়ে বলেন, ঘুষ-দুর্নীতি-লুটপাট প্রতিরোধ, জীবন-জীবিকা, বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতা, ভোটাাধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার সমুন্নত রাখতে হলে ভোট ডাকাতি মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকা এ সরকারকে হঠাতে হবে। এর জন্য গণসংগ্রাম, গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
বক্তারা বলেন, সরকার করোনা মোকাবিলায় ১ লাখ ২৮ হাজার কোটি টাকা আর্থিক প্রণোদনা দিয়েছে। এই সামান্য কিয়দংশ সরাসরি গরিব মানুষকে দেয়া হয়েছে। আড়াই হাজার টাকা করে পঞ্চাশ লাখ মানুষকে দেয়ার কথা থাকলেও তা সকলকে দেয়া হয় নাই। প্রণোদনার প্রায় পুরোটা শিল্পা মালিকসহ ধনী উদ্যোক্তাদের প্রদান করা হয়েছে। কৃষক, শ্রমিকদের নামে যে বরাদ্দ তা গেছে মুলত চাতাল মালিক, ব্যবসায়ী, অকৃষক জমির মালিক ও গার্মেন্ট কারখানার মালিকদের হাতে। কমরেড শাহ আলম বলেন, এ সরকার লুটেরা ধনিকদের সরকার। শেয়ার বাজার লুণ্ঠনকারীরা সংসদ আলোকিত করে বসে আছে। ব্যবসায়ীরা মন্ত্রিসভার মূল মূল পদগুলোতে আসীন হয়ে আছে। তিনি বলেন, দেশকে মুক্তিযুদ্ধের ধারায় চালিত করতে হলে লুটেরা ধনিকদের ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করতে হবে।