প্রগতি লেখক সংঘের ঢাকা বিভাগীয় সোমেন চন্দ সাহিত্য সম্মেলনে সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে শিল্পী-সাহিত্যিক-কবিদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক এসেছে।
৩১ জানুয়ারি, ২০২০ শুক্রবার নারায়ণগঞ্জ চাষাড়া শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘের উদ্যোগে দিনব্যাপী এ সাহিত্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে লেখক ও কবিরা সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।
সকাল ১০টায় সাহিত্য সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রগতি লেখক সংঘের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া পিনু। প্রগতি লেখক সংঘ নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা সাধারণ সম্পাদক বিমল কান্তি দাসের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী পর্বে বক্তব্য রাখেন প্রগতি লেখক সংঘের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শামসুজ্জামান হীরা, সাধারণ সম্পাদক দীপংকর গৌতম।
উদ্বোধনী পর্বের পর একটি বর্ণাঢ্য র্যালী নারায়ণগঞ্জ শহর প্রদক্ষিণ করে। এর পর দুটি পর্বে কবিকন্ঠে কবিতা পাঠের আসর অনুষ্ঠিত হয়। এ আয়োজনে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি গোলাম কিবরিয়া পিনু, বিমল গুহ, দুলাল সরকার, মুজিবুল হক কবীর, মীনা গুহ, আনোয়ার কামাল, দীপংকর গৌতম, বাবুল আনোয়ার, প্রণব মজুমদার, রইস মুকুল, রঘু অভিজিৎ রায়, প্রশান্ত মণ্ডল, অভিনু কিবরিয়া ইসলাম, হাবীব ইমন, মাহবুবুল হক, শ্যামল কুমার সরকার, হাবিব সিদ্দিকী, শ. ম. কামাল, মহসিন খন্দকার, জাবেদ ভুঁইয়া, সুনীল মাঝি, আসমা বেগম, রাজলক্ষী, কায়েস সৈয়দ, তিথি সুবর্ণা, দিলারা রিঙ্কি।
বিকেল ৪টায় হয় ‘বাংলাদেশের সাহিত্যে প্রগতিশীল ধারা’ শীর্ষক আলোচনা। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন নজরুল আলম মিন্টু। এ পর্বে মূল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি ড. সফিউদ্দিন আহমদ।
সম্মেলনের শেষ পর্বে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরষ্কার বিতরণ করা হয়। হয় প্রতিবাদী আবৃত্তি, গান ও নৃত্যের প্রদর্শনী।
দিনব্যাপী এ সাহিত্য সম্মেলনের বিভিন্ন পর্বে বক্তারা বলেছেন, বিশ্বব্যাপী প্রগতিশীল চিন্তা চেতনার উপর নানাভাবে আক্রমণ আসছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ধর্ম ও জাতীয়তাবাদের নামে আগ্রাসন চলছে। ফ্যাসিবাদী প্রবণতা বিকশিত হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্য, লাতিন আমেরিকা, আফ্রিকা মহাদেশসহ বিশ্বজুড়েই সাম্রাজ্যবাদ তার বিষাক্ত ছোবল হানা অব্যাহত রেখেছে। দেশে দেশে লেখক কবি বুদ্ধিজীবীরা রাস্তায় নেমে এর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছেন। বাংলাদেশেও নানাভাবে মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর আঘাত আসছে। পাঠ্যপুস্তকে মৌলবাদী চিন্তা চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটছে। ধনী-গরীবের ব্যবধান বাড়ছে। লুটপাট-দুর্বৃত্তায়ন সমাজের অবক্ষয়কে বাড়িয়ে তুলছে।
বক্তারা আরো বলেন, চল্লিশের দশকে এই উপমহাদেশে যে প্রগতি সাহিত্য আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল, তার ধারাবাহিকতায় এই অঞ্চলে সাংস্কৃতিক আন্দোলন বিকশিত হয়েছে। বর্তমানের জটিল আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতিতেও লেখক কবিদের ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।