অযথা আতংকিত না হয়ে সকলকে সতর্ক হয়ে সমন্বিতভাবে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এবং বারসিক।

চীন থেকে উৎপন্ন করোনা ভাইরাসের আতংক ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী । বন্দর ও চেকপোস্টগুলোতে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে বাংলাদেশও। অযথা আতংকিত না হয়ে সকলকে সতর্ক হয়ে সমন্বিতভাবে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এবং বারসিক। ২৯ জানুয়ারি পবা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘করোনা ভাইরাস: শংকা ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা জানান, যত বেশি পরিবেশগত সংকট ও দূষণ তৈরি হচ্ছে ততই এমনসব রোগ ও মহামারী বাড়ছে। পরিবেশ ও প্রকৃতিকে সংরক্ষণ করে সামগ্রিক উন্নয়ন না ঘটলে করোনার মতো সংকট সামাল দেয়া ভবিষ্যতে আরো কঠিন হয়ে ওঠবে। পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিতে এবং বারসিকের ফেরদৌস আহমেদ উজ্জ্বলের সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে মূল আলোচনা উত্থাপন করেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ও শিশুসংগঠক ডা. লেলিন চৌধুরী। আলোচনা করেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. এম এ সাঈদ, পবার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুস সোবহান, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. মোস্তাক হোসেন, প্রাণ-প্রকৃতি গবেষক পাভেল পার্থ, নিরাপদ স্বাস্থ্যআন্দোলনের জেবুন্নেসা, পরিবেশকর্মী জাহাঙ্গীর আলম ও সাবিনা নাঈম এবং মানবাধিকারকর্মী মাহবুবুল হক প্রমুখ। সেমিনারে বক্তারা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে নিম্ন লিখিত প্রস্তাবগুলো তুলে ধরেন:
১. করোনা ভাইরাস নিয়ে মানুষের ভেতর তৈরি হওয়া আতংক কমিয়ে এই ভাইরাস প্রতিরোধে সম্মিলিত পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
২. করোনা ভাইরাস নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ গণমাধ্যমে অযথা গুজব, সাম্প্রদায়িক বৈষম্যমূলক তথ্য ও আতংক ছড়ানো বন্ধ করে সত্যিকারের গঠনমূলক তথ্য-উপাত্ত পরিবেশন করতে হবে।
৩. চীনসহ বিদেশে থেকে যারা আসবেন এবং সেখানে যাবেন তাদের ধারাবাহিক স্বাস্থ্যগত পরীক্ষা করতে হবে।
৪. চীনের সাথে বাণিজ্য, পর্যটন, পড়াশোনা, চিকিৎসা, নির্মাণকাজ বন্ধ না করে পুরো প্রক্রিয়াকে ধারাবাহিক মনিটরিং এর ভেতর রাখা।
৫. চীন বা বাইরে থেকে এসে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে সেই তথ্য নিকটস্থ সরকারি হাসপাতাল বা এ বিষয়ে খোলা হটলাইনে জানানো।
৬. অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালের আউটডোরে না আনা, তার তথ্য প্রদান করে তার কাছে সেবাদানকারীদের যাওয়া দরকার।
৭. চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে যেন কোনোভাবেই এই রোগ ছড়াতে না পরে তার ব্যবস্থা নেয়া। হাসপাতালে সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।
৮. হাসপাতালে রোগীর সহকারী ও পরিজনদের এই করোনা ভাইরাস বিষয়ে সতর্ক ও সচেতন করা।
৯.
১০. গর্ভবতী নারী, শিশু, প্রবীণ, প্রতিবন্ধী ও অসুস্থ রোগীদের এই সময়ে চীন যাতায়াত পরিহার করা।
১১. কাঁচাবাজার ও বাইরে থেকে এসে হাত ভালভাবে ধোওয়া এবং অবশ্যই ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা। হাঁচি-কাশি মুখ ঢেকে দেয়া এবং ময়লা-আবর্জনা যত্রতত্র না ফেলা।
১২. ধূলাবালি ও সংক্রমণ প্রতিরোধে মুখে মাস্ক ব্যবহার করা। তবে মাস্ক ব্যবহার করে তা যত্রতত্র না ফেলে নির্দিষ্টস্থানে ফেলতে হবে।
১৩. কাঁচা ও প্রাণিজ খাবার ভালভাবে ধুয়ে ও পরিপূর্ণ সিদ্ধ করে খাওয়া।
১৪. কাউকে সন্দেহ হলে বিশেষভাবে যারা চীনসহ বিদেশ থেকে এসেছেন তাদেরকে নিজেদের পরিবারে ঘরের ভেতর ১৪ দিন সেবাযত্ন করা। এরপর কোনো লক্ষণ দেখা দিলে সরকারি হটলাইনে জানানো।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *