গার্মেন্ট বন্ধ হওয়ার পর পরিবারের সবাইকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে এসেছিলাম। এখন কালকে থেকে গার্মেন্ট খোলা, তাই আবার গাজীপুর ফিরে যাচ্ছি। সময়মত গার্মেন্টে উপস্থিত না হলে চাকরি থাকবে না।’ রপ্তানিমুখী শিল্প-কারখানা খুলে দেওয়ায় বরিশাল থেকে গাজীপুর ফেরার সময় ক্ষোভ প্রকাশ করে কথাগুলো বলেন শ্রমিক আলমগীর হোসেন।
একই কথা বলছিলেন পটুয়াখালী থেকে আসা ঢাকার সাভারের একটি পোষাক কারখানার শ্রমিক শিউলী আক্তার। তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে সব কিছু বন্ধ তবু গার্মেন্ট খুলে দেওয়া হলো। এটা কেমন সিদ্ধান্ত? আমি আর আমার স্বামী দুজনেই গার্মেন্টে চাকরি করি। যদি গার্মেন্টে না যাই তবে চাকরি থাকবে না। করোনা হোক আর যাই হোক পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার তুলে দিতে সময়মত কাজে যোগ দিতেই হবে।
কঠোর লকডাউনের মধ্যে রপ্তানিমুখী শিল্প-কারখানা খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এতে চাকরি বাঁচাতে জীবন ঝুঁকি নিয়ে রাজধানীতে আসছে মানুষ। তবে গণপরিবহন পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী বন্ধ আছে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ঢাকামুখী যাত্রীদের চাপে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে বেসামাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বরিশাল,পটুয়াখালী, খুলনা, ফরিদপুর, মাদারীপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, থ্রিহুইলারসহ হালকা যানবাহনে চড়ে ঘাটে আসছেন যাত্রীরা। তেব এতে পকেট কাটছে চালকরা। দুই থেতে তিনগুন ভাড়া বাড়িয়ে নিচ্ছে তারা।
বাংলাবাজার ঘাটে যাত্রী চাপে ফেরিতে জরুরি গাড়ি উঠাতে হিমশিম খাচ্ছে। গার্মেন্টসসহ রপ্তানিমুখী কল-কারখানা খোলার ঘোষণায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে বিআইডব্লিউটিসি সূত্র দাবি করেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ফেরির সংখ্যা ছয় থেকে বাড়িয়ে ১০ করা হয়েছে। শিমুলীয়া ঘাট থেকে এ পর্যন্ত ১২টি খালি ফেরি আনা হয়েছে বাংলাবাজার ঘাটে। যাত্রীদের চাপে এদিন অন্তত ১০ ফেরি বাংলাবাজার ঘাট থেকে শুধুমাত্র যাত্রী নিয়ে শিমুলীয়া উদ্দেশে ছেড়ে গেছে।
এদিকে, এই রুটের লঞ্চসহ অন্যান্য নৌযান বন্ধ রয়েছে। পদ্মায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় এবং স্রোতের গতিও বৃদ্ধি পেয়ে ফেরি পারাপারে দীর্ঘ সময় লাগছে।
রো রো ফেরি শাহ পরানের মাস্টার ইনচার্জ মো. সিরাজ বলেন, ফেরিতে যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপ থাকায় ঠিকমত গাড়ি উঠতে পারছে না। মূলত গার্মেন্ট কর্মীদের জন্যই এই ভিড়।
বাংলাবাজার ঘাট ম্যানেজার মো. সালাউদ্দিন বলেন, গার্মেন্ট কর্মীদের প্রচণ্ড চাপ রয়েছে সকাল থেকে। এজন্য ফেরি সংখ্যা ৬ থেকে ১০ বাড়ানো হয়েছে। এরপরও প্রচণ্ড চাপ রয়েছে ঘাটে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এ পর্যন্ত শিমুলীয়া থেকে ১২টি খালি ফেরি বাংলাবাজার ঘাটে আনা হয়েছে।