চলমান বিধিনিষেধে শ্রমিক ছাঁটাই ও কলকারখানা লে-অফ না করতে মালিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান।
শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, ‘করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এই বিধিনিষেধের আওতায় সব ধরনের কলকারখানা বন্ধ। এই দুর্যোগে শ্রমিক ছাঁটাই ও কলকারখানা লে-অফ ঘোষণা না করতে মালিকদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানাচ্ছি।’
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক ও অন্যান্য শিল্পকারখানার মালিকপক্ষের প্রতি এই অনুরোধ জানান।
চলমান দুই সপ্তাহের বিধিনিষেধের মধ্যে ১ আগস্ট থেকে কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি করেছিলেন পোশাকশিল্পের মালিকেরা। তবে সরকার বিষয়টি বিবেচনা না করায় অনেক কারখানার মালিক শ্রমিকদের মজুরিতে হাত দেওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে কিছু কারখানা শ্রম আইনের ১২ (৮) ধারায় কারখানা বন্ধের নোটিশও দিয়েছে। সেটি বাস্তবায়ন হলে ঈদের পর বিধিনিষেধের কারণে কারখানা বন্ধের দিনগুলোতে শ্রমিকেরা তাঁদের মূল মজুরির অর্ধেক পাবেন। তবে বাড়িভাড়া, চিকিৎসা, খাদ্যসহ অন্যান্য ভাতা কর্তন হবে না। এমনকি আগস্ট মাসের প্রথম পাঁচ দিনের মজুরিও কম পাবেন তাঁরা। অবশ্য অনেক প্রতিষ্ঠান কারখানা খোলার পর ওভারটাইম ও সাপ্তাহিক ছুটির দিনে শ্রমিকদের কাজ করিয়ে চলমান বিধিনিষেধের ছুটি সমন্বয় করার পরিকল্পনাও করেছে।
বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান গত মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিধিনিষেধ সমাধান নয়। টিকা দিয়েই শ্রমিকদের সুরক্ষিত করতে হবে। আমরা এখনো আশাবাদী, ১ আগস্ট কারখানা খোলার ব্যাপারে সরকার ইতিবাচক সিদ্ধান্ত দেবে। আপাতত কারখানার আশপাশের শ্রমিক দিয়েই আমরা উৎপাদন চালিয়ে নিতে পারব।
বিজিএমইএর সভাপতি আরও বলেন, ‘কমবেশি সব কারখানা আর্থিক সংকটে আছে। ফলে চলতি মাসের মজুরি দিতে সবাই হিমশিম খাবে। ১ আগস্ট কারখানা খোলার সুযোগ পাব, সেই আশায় আমরা সদস্যদের লে-অফ না করতে অনুরোধ করেছি। সেটি না হলে কারখানাগুলোকে লে-অফ করা থেকে আটকানো যাবে না।
করোনার প্রথম ধাক্কায় গত বছরের এপ্রিলে তিন সপ্তাহের মতো পোশাক কারখানা বন্ধ ছিল। তখন শ্রমিক-কর্মচারীরা মোট মজুরির ৬৫ শতাংশ অর্থ পান, যদিও তার আগেই শ্রমিকদের তিন মাসের মজুরি দিতে সরকার ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল ঘোষণা করে। পরে তিন মাসের পরিবর্তে চার মাসের মজুরি দেওয়ার জন্য প্রণোদনা তহবিল থেকে ঋণ পান।