সাতক্ষীরার কালীগঞ্জের মুথরেশপুর ইউনিয়নের হাড়দ্দাহ গ্রামে চার মিনিটের ঝড়ে অন্তত ৩০টি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে হঠাৎ এই ঝড় শুরু হয়। এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিতে কালীগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে মাছের ঘের।
মথুরেশপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকে উপজেলায় মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। এতে উপজেলার নিচু অঞ্চলগুলো তলিয়ে যায়। বিশেষ করে মাছের ঘের ও ফসলের খেত ডুবে যায়। এ অবস্থায় রাত ১০টার দিকে হঠাৎ করে ঝড় শুরু হয়। মাত্র চার মিনিটের ঝড়ে হাড়দ্দাহ গ্রামের বেশকিছু কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
প্রবল বৃষ্টিতে মাছচাষি নুর হোসেনের ৫০ বিঘাজুড়ে মাছের ঘের নদীর সঙ্গে মিশে একাকার হয়ে গেছে। এতে তাঁর ২০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।
হাড়দ্দাহ গ্রামের আফসানা পারভীন নামের এক গৃহবধূ জানান, মঙ্গলবারের বৃষ্টিতে তাঁর বাড়ির আঙিনা পর্যন্ত পানি চলে এসেছে। পরে রাতে ঝড়ের কারণে তাঁর ঘরও ভেঙে পড়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘এখন আমরা কোথায় যাব কী করব, এটা নিয়ে চিন্তা করে কোনো কূল পাচ্ছি না।’
কুশলিয়া গ্রামের নুর হোসেন নামের এক মাছচাষি জানান, প্রবল বৃষ্টিতে তাঁর ৫০ বিঘাজুড়ে মাছের ঘের নদীর সঙ্গে মিশে একাকার হয়ে গেছে। এতে তাঁর ২০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
দুটি সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে মাছের ঘের করেছিলেন কৃষ্ণনগর এলাকার আরিফুল ইসলাম। কিন্তু গতকালের অধিক বৃষ্টির কারণে তাঁর একটি ২০ বিঘার ঘের অন্য একজনের ঘেরের সঙ্গে পানিতে তলিয়ে ৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান।
ঝড়ে মথুরেশপুর ইউনিয়নের ৩০ থেকে ৩৫টি কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহযোগিতার জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাঁদের জন্য শুকনা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
খন্দকার রবিউল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা
কালীগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সুকুমার দাস জানান, বৃষ্টিতে উপজেলার মাছের ঘেরগুলো তলিয়ে গেছে। পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তাঘাটও ডুবে গেছে। অনেকের বাড়ির আঙিনায় এখনো পানি রয়েছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খন্দকার রবিউল ইসলাম বলেন, ঝড়ে মথুরেশপুর ইউনিয়নের ৩০ থেকে ৩৫টি কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহযোগিতার জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাঁদের জন্য শুকনা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ ছাড়া গতকাল ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে আটকে থাকা পানি সরানোর জন্য পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি কালভার্টের মুখ পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে।