শ্রম আইন ও বিধিমালার অগণতান্ত্রিক ধারা সমূহ বাতিলের দাবি করেছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট।
শ্রম আইনের ২৩,২৬,২৭ ধারাসহ অগণতান্ত্রিক ধারা সমূহের অপব্যবহার বন্ধ করে অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন চর্চার পরিবেশ নিশ্চিত কর। শ্রম আইন ও বিধিমালার শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী অগণতান্ত্রিক ধারাসমূহ বাতিলের দাবিতে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের উদ্যোগে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ২৪ জানুয়ারী ২০২০, সকাল ১১টায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল আনুষ্ঠিত হয়।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি আবদুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক আহাসান হাবিব বুলবুল, সহ-সম্পাদক ইমাম হোসেন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, কোষাধ্যক্ষ জুলফিকার আলী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু নাঈম খান বিপ্লব, আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. বিমল চন্দ্র সাহা, ঢাকা নগর সভাপতি রতন মিয়া প্রমুখ।
সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ও শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) এর যুগ্ম সম্বন্বয়ক নঈমুল আহসান জুয়েল, জাতীয় শ্রমিক জোটের কার্যকরী সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ। নেতৃবৃন্দ বলেন, ব্যবসায়ী সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ ২০০৬ সালে কয়েক মিনিটের মধ্যে যে শ্রম আইন পাশ করেছিল, শ্রমিকদের প্রতিবাদ আন্দোলনের মুখে দীর্ঘ দিন তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পুর্বে শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী ধারা সমূহ সংশোধন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তার ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে শ্রম আইনের পূর্বের কিছু ধারা সংশোধন করা হলেও শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী নতুন কিছু ধারা যুক্ত করা হয়।
২০১৫ সালে নতুন বিধিমালা প্রণয়ন এবং ২০১৮ সালে শ্রম আইন পূণরায় সংশোধন করা হয়। বর্তমানে বিধিমালা সংশোধনের কাজ চলছে। পূর্বের অভিজ্ঞতা অনুসারে দেখা যায় শ্রমিক আন্দোলন বা বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের সমালোচনার মুখে সরকার শ্রম আইন সংশোধন করলেও প্রতিটি সংশোধনিতে শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করার পরিবর্তে বিভিন্ন কৌশলে শ্রমিকদের স্বীকৃত অধিকার সমূহ সংকুচিত করা হয়েছে। শ্রম আইনের ২৩, ২৬ ও ২৭ ধারার অপব্যবহার করে শ্রমিকদের কর্মচ্যুত ও ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করার মাধ্যমে শ্রমিকদের মত প্রকাশের এবং সংগঠিত হওয়ার অধিকারকে সংকুচিত করা হয়েছে।
প্রতি বছরের চাকুরির জন্য প্রাপ্য সুবিধা বিষয়ে গ্রাচ্যুয়টি এবং ক্ষতিপুরণ নামক দুই ধরণের শব্দ ব্যবহার করে শ্রমিকদের বঞ্চিত করার সুযোগ রাখা হয়েছে। ঠিকাদারী, তদারকী কর্মকর্তা, মাতৃত্বকালীন সুবিধায় বৈষম্য, কর্মঘন্টা, কারখানা স্হানান্তর এবং উৎসব বোনাস সংক্রান্ত বিধিতে শ্রমিকদের ঠকিয়ে মালিকদের স্বার্থ রক্ষা কারার ব্যবস্হা করা হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করতে আই.এল.ও কনভেনশন লঙঘন করে এমনভাবে শর্তযুক্ত করা হয়েছে যাতে মালিকের ইচ্ছায় শ্রম দপ্তর নিয়ন্ত্রিত হয়।
বিধিমালা প্রণয়নের আলোচনায় শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) এর পক্ষ থেকে ৩৬৭ টি ধারা সম্বলিত শ্রম বিধিমালায় ৪৭ টি বিষয়ে সংশোধনের প্রস্তাব দেয়া হলেও তা বিবেচনায় না নিয়ে বরং শ্রমিকের অধিকার আরও সংকোচন করা হয়েছে। নেতৃবৃন্দ শিল্পের বিকাশ নিশ্চিত এবং সামাজিক বৈষম্য নিরসন করতে শ্রম আইন ও বিধিমালার অগণতান্ত্রিক ধারা সমূহ বাতিল করার আহবান জানান