প্রস্তাবিত বাজেটে শ্রমজীবী মানুষের প্রত্যাশা পুরন হয়নি-শ্রমবান্ধব, উৎপাদনশীল ও গণমুখী বাজেট প্রণয়নের দাবী
বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি)’র সাভার-আশুলিয়া আঞ্চলিক কমিটির উদ্যোগে আজ ০৪ জুন ২০২১, শুক্রবার, বিকাল ৪ টায় আশুলিয়ার, ফকির বাড়ি রিক্সা গ্যারেজে, অবিলম্বে শ্রমবান্ধব, উৎপাদনশীল ও গণমুখী বাজেট প্রণয়নের দাবীতে শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি)’র সাভার-আশুলিয়া আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি খাইরুল মামুন মিন্টু’র সভাপতিত্বে, সাধারণ সম্পাদক, মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর পরিচালনায়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন সাভার-আশুলিয়া আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি, সাইফুল্লাহ আল মামুন।আশুলিয়া থানা সড়ক নির্মান শ্রমিক ইউনিয়ন এর সভাপতি, নবীয়াল ফকীর, সাধারণ সম্পাদক, নদের চাঁদ মিয়া। আশুলিয়া থানা রিক্সা ও ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন এর সভাপতি, আব্দুল মজিদ, সাধারণ সম্পাদক, আলতাব হোসেন, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক, মামুন দেওয়ান।
সমাবেশ নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০২১-২০২২ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে শ্রমজীবী মানুষের প্রত্যাশা পূরন হয়নি। নেতৃবৃন্দ বাজেটকে গতানুগতিক আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে শ্রমবান্ধব, উৎপাদনশীল ও গণমুখী বাজেট প্রণয়নের জন্য সরকার ও জাতীয় সংসদের প্রতি আহবান জানান।
নেতৃবৃন্দ বলেন প্রতিবছর বাজেটের আকার বাড়ছে, একইসাথে ঘাটতিও।এবারও তাই হয়েছে। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও বাজেটে শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থকে উপেক্ষা করে মালিকগোষ্টীর স্বার্থকেই প্রধান্য দেয়া হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনাকালে দেশের অর্থনীতি লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। এইসময় পৌণে দুই কোটি লোক নতুন করে দরিদ্র হয়েছে। দেশে দারিদ্র্যের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ শতাংশ। এই বিপুল জনগোষ্ঠীকে পূণর্বাসন ও নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বাজেটে কোন দিকনির্দেশনা নেই।
উৎপাদনের মূল চালিকাশক্তি শ্রমজীবী মাসুষের খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ নেই। করোনার কারনে বিপুল সংখ্যক মানুষ চাকুরী ও কাজ হারিয়ে বেকার জীবনযাপন করলেও তাদের জন্য বেকারভাতার ব্যবস্থা রাখা হয়নি। দেশের সোনালী আঁশ খ্যাত ঐতিহ্যবাহী পাটশিল্পকে আধুনিকায়নের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে চালুর জন্য স্কপের নেতৃত্বে দেশের শ্রমিক সংগঠনগুলো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পেশ করা হলেও তা উপেক্ষা করা হয়েছে।
এছাড়া চিনি, সুতা ও ক্যামিকেলসহ দেশীয় শিল্প কারখানা বিকাশেও কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। বাজেটে রেকর্ড পরিমাণ ঘাটতির ফলে মুদ্রাস্ফীতি অনেক বেড়ে যাবে এবং শ্রমিক কর্মচারীদেরকে মজুরি বৃদ্ধির অনিশ্চয়তাসহ নানামুখী সংকটের সম্মুখীন হতে হবে।
মুক্তবাজার অর্থনীতির নামে অবাধ বিরাষ্ট্রীয়করনের ফলে বর্তমানে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সবকিছু সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকেনা। যার কারনে নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের জন্য রেশনের মাধ্যমে খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করা অতীব জরুরী। কিন্তু বাজেটে এর কোন রুপরেখা নেই।
নেতৃবৃন্দ করোনা বিপর্যয় রোধে শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের জন্য রেশনের মাধ্যমে সস্তা ও বাঁধা মূল্যে চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ও নগদ অর্থ সরবরাহ করতে হবে।
একইসাথে উৎপাদন, আমদানি রপ্তানি ও অর্থনীতিকে সচল রাখতে হলে জীবন ও জীবিকার অনিশ্চয়তায় মানবেতর জীবনযাপন করা শ্রমজীবী স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। শিল্পকারখানা ও অঞ্চল ভিত্তিক ডরমিটরি স্থাপন করে আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। করোনাকালে যেসকল শ্রমিক চাকুরী ও কাজ হারিয়েছে তাদের বিকল্প কর্মসংস্থান এবং শ্রমবাজারে আসা তরুনদের কর্মসংস্থানের জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখতে হবে।
নেতৃবৃন্দ দেশের শিল্প, অর্থনীতি ও শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থে শ্রমবান্ধব, উৎপাদনশীল ও গণমুখী বাজেট প্রণয়নের দাবী জানান।