দুর্নীতি, অনিয়ম, মালিকদের অনুগত, আন্দোলন বিক্রি, ইউনিয়ন বিক্রি, শ্রমিদের কাছে থেকে পার্সেন্ট্রিস নেওয়া, এনজিও ভিত্তিক সংগঠন পরিচালনা, মালিক ও পুলিশের টাকায় সংগঠন পরিচালনার কারনে শ্রমিকরা শ্রমিকনেতাদের উপর আস্থা হারিয়েছে।
যার কারনে কারখানা ভিত্তিক সংগঠিত ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন গড়ে উঠছেনা। যার ফলে শ্রমিক সংগঠন গুলো শ্রমিকদের উপর ভরসা হারিয়ে তারা এখন বিদেশীদের উপর বেশী ভরসা রাখছে। বিদেশী ডোনার, বিদেশী বায়ারদের কে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে। এবারের মে দিবসে তারি প্রতিফলন ঘটেছে। বেশীর ভাগ শ্রমিক সংগঠনের এবারের মে দিবসের ব্যানারে ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। আমার প্রশ্ন হলো এই ইংরেজী লেখা ব্যানার কাকে দেখানোর জন্য বানানো হয়েছে।
অনেক শ্রমিক সংগঠন আছে যারা মালিকদের বিরুদ্ধে বড় বড় কথা বলে অথচ তাদের সংগঠন চলে মালিকদের টাকায়।
কিছু সংগঠন আছে যারা এনজিওদের বিরুদ্ধে বড় বড় কথা বলে অথচ এনজিওদের টাকায় সংগঠন পরিচালনা করে, বিদেশ ভ্রমণ করেন।
শ্রমিকনেতাদের এই ধরণের দু-মুখো আচরণে কারনে শ্রমিকরা শ্রমিকনেতাদের উপর আস্থা হারিয়েছে। যার কারনে সংগঠিত কারখানা ভিত্তিক ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন গড়ে উঠছেনা।
বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারনে গার্মেন্ট শ্রমিকদের উপর নেমা আসা নির্যাতনে শ্রমিকদের পাশে শ্রমিক সংগঠন গুলো শ্রমিকদের পাশে থেকে ভূমিকা রাখতে পারছেনা।
গত বছর মার্চ থেকে এ পর্যন্ত লক্ষ লক্ষ শ্রমিককে বে-আইনি ভাবে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে, তাদের আইনানুগ পাওয়া ঠিক মত পাইনি। বেতন ৩৫% কমিয়ে দেওয়া হয়েছে, সব কারখানায় ঈদ বোনাস দেওয়া হয়নি। তিন জন শ্রমিকের কাজ ২ জনকে দিয়ে করানো হচ্ছে। কারখানায় যথাযত স্বাস্থ্য বিধি না মেনেই শ্রমিকদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কারখানা চলছে।
লকডাউনে শ্রমিকদের মালিকদের ব্যবস্থাপনায় পরিবহনের ব্যবস্থা করার কথা থাকলেও মালিকরা তা করেনি।
এই করোনা পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের উপর নেমা আসা সীমাহীন নির্যাতনে শ্রমিকদের পাশে কে কত টুকু আছে তা দেশ বাসী দেখছে।
শ্রমিকদের মধ্যে থেকে যতদিন না শ্রমিকনেতা গড়ে উঠবে, ততদিন শ্রমিকদের মুক্তি আসবেনা। তাই কারখানা ভিত্তিক ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে তুলতে হবে, শ্রমিকদের দাবী শ্রমিকদেরকেই আদায় করতে হবে। বিদেশী ডোনার কিংবা বিদেশী বায়ারদের উপর নির্ভর করে শ্রমিকদের সংগঠিত করে কোন লাভ হবেনা।
লেখকঃ খাইরুল মামুন মিন্টু
সাংগঠনিক সম্পাদক, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র