পাবনার কাশিনাথপুরের চাষীরা মরিচের বিভিন্ন রোগ নিয়ে চিন্তিত, পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তা |

মরিচ বাংলাদেশে একটি অর্থকারী ফসল। মরিচ চাষ করে বর্তমানে আমাদের দেশের কৃষকেরা অনেক লাভবান হচ্ছেন। প্রতি বছরের ন্যায় এবছর পাবনার কাশিনাথপুর ইউনিয়নে প্রায় ২৫০ হেক্টর ভুমিতে মরিচ চাষ করেছে এলাকার কৃষকগণ | বর্তমানে প্রতি কেজি মরিচ প্রায় ১৫ টাক হতে ২০ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে |
সরজমিনে দেখা গেছে কাশিনাথপুর ইউনিয়নের,শ্রীধরকুড়ার বিলে, বরাট(ডাঙ্গারচক), রামভদ্রবাটি(লালীরচক), কড়িয়াল, পাইকরহাটি, বড়গ্রাম, টাঙ্গাবাড়ী্ উৎরাইল, নালীপর্বত, ছাতক বরাট, কাবাড়িকোলা, মেহেদীগর বিলের মাঠে, কন্যাণপুর, হুইখালী, মানপুর সহ ইউনিয়নের বিভিন্ন বিল ও মাঠে মাঠে মরিচে চাষ করেছেন চাষীগণ |মরিচ চাষ করার ক্ষেত্রে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। মরিচের ক্ষেতে বিভিন্ন ধরণের রোগ বালাইয়ের আক্রমণ হওয়ার কারনে কৃষকেরা আর্থিক ক্ষতি মুখে পড়ে থাকেন |
কাশিনাথপুর ইউনিয়নের ছাতকবরাট গ্রামের চাষী মোঃ সোবহান ফকির বলেন বেশ কিছু বছর হল আমরা মরিচ চাষ করে তেমন লাভের মুখ দেখতে পারিনা কারন যখন মরিচ জমি হতে আমরা উত্তোলন করা শুরু করি তখন মুল্য এতই কম থাকে যে আমাদের চাষের খরচও উঠে না, এমতাবস্থায় আমরা মরিচের পরিবর্তে অন্য ফসল চাষের দিকে নজর দিচ্ছি | তিনি আরোও বলেন প্রকৃতিক দুর্যোগ সহ নানা কারণের আমরা মরিচ তেমন ফলাতে পারছিনা, এছাড়া অতি বৃস্টি ও অনাবৃষ্টি ফলে মচির মরে যায় এতে আমরা ক্ষতির মুখে পড়ে যাই , তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের রোগবালাইয়ের ফলে মরিচের ফলন তেমন ভাল হয় না যার কারণে মরিচ চাষে আমাদের তেমন আগ্রহ নেই | লোকবলের অভাবে মরিচ উত্তোলন করা বেশ সমস্যা হচ্ছে এছাড়াও মরিচ যে মুল্য বিক্রয় হচ্ছে সে তুলনায় উত্তোলন খরচ বেশ বেশি হওয়ায় আমরা মরিচ চাষীরা তেমন ভাল নেই বললেই চলে এমন তথ্য তিনি জানিয়েছেন
কড়িয়াল গ্রামের আদর্শ কৃষক মোঃ আলম শেখ জানান যে আমাদের এলাকাতে বর্তমানে মরিচের তেমন ভাল ফলন হচ্ছে না | কারণ হিসেবে তিনি জানান যে যথাসময়ে বৃষ্টি ও পানির অভাব ও নানা ধরের রোগবালাইয়ের ফলে মরিচ গাছ বেড়ে উঠতে পারে না |বন্যার কারণে মরিচ পানিতে তলিয়ে যায় তখন উচ্চ জমিতে যাদের মরিচ থাকে এমন চাষীরা ভালদামে মরিচ বিক্রয় করে থাকেন তিনি জানান | মরিচের উৎপাদন বাড়ানো, রোগ দোমন সহ ফলন বাড়ানোর নানা বিষয়ে মাঠে থাকে কৃষি কর্মকর্তারা আমাদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন | তিনি বলেন বর্তমানে প্রতি কেজি মরিচ প্রায় ১৫ টাক হতে ২০ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে |
মরিচের জন্য বিখ্যাত বলে পরিচিত পাবনার-কাশিনাথপুর এলাকার চাষীদের মরিচ চাষে তেমন আগ্রাহ না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে কাশিনাথপুর ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ফরহাদ হোসেন জানান এ এলাকাটি বেশ উচ্চ হওয়ায় সময় মত জমিতে তেমন পানি উঠে না যার কারণে জমির উর্বরতা শক্তি ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে, সংগত কারণে মরিচের ফলন তেমন হচ্ছে না| পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ সহ আমাদের বাংলাদেশে রোপা ঝাল মরিচ, বোনা ঝাল মরিচ, ও মিষ্টি মরিচ সহ অনেক ধরনের মরিচের আবাদ হয়| এ মরিচ গুলোর ফলন বেশ ভাল তাই এ মরিচগুলো ভালভাবে যত্নসহকারে পরিচর্যার মাধ্যমে কৃষকগণ আর্থিক ভাবে লাভবান হবে আমি আশা করি| তিনি বলেন যে মরিচের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ঢলে পড়া রোগ,গোরা পচা,কান্ড পচা,বেকটেরিয়া জনিত ক্ষত, পাতা কোকরানো,ফল ছিদ্র কারি পোকা ইত্যাদি রোগ হতে কৃষক কিভাবে মরিচের ক্ষেত রক্ষা করবেন এর প্রতিকারে তিনি পরামর্শ দিচ্ছেন, পাশাপাশি মরিচ চাষে চাষীদের উদ্বুদ্ধ করা সহ বিভিন্ন রোগের বিষয়ে প্রশিক্ষণ/সচেতন সহ মরিচের রোগ নিয়ন্ত্রনের জন্য সুস্থ ফল হতে বীজ সংগ্রহ করতে হবে। রোগাক্রান্ত গাছ এবং আশেপাশের আগাছা ধ্বংস এবং জমিতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে যাতে করে চাষীরা মরিচ আবাদ করে আর্থিক লাভবান হবেন এমনটা তিনি জানান|

শেয়ার করুনঃ