লকডাউন মানেই মায়ের কোলে অনাহারী শিশুর কান্না। লকডাউন মানেই অসহায়ের মুখের অন্ন কেড়ে নেওয়া।
যে স্কুল ছাত্রের হাতে বই থাকার কথা করোনার কারনে নেশা গ্রস্ত হয়ে রাস্তায় পড়ে রয়েছে। যে স্কুল ছাত্রীর হাতে বই খাতা থাকার কথা ছিল সেই হাতে সন্তান লালন পালনের দ্বায়িত্ব ধরিয়ে দিয়েছে।যতই সামাজিক অনুষ্টান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হোক না কেন?রাতের আধারে অসংখ্য বাল্যবিবাহ দিনের পর দিন বেড়েই চলছে। অসহায় দিন মজুর সারাদিনের অক্লান্ত পরিশ্রমের বিনিময়ে বেলা শেষে দু’বেলা দু’মোটো খাবার জুটানো যাদের পক্ষে কষ্টদায়ক, করোনা নামক ভয়ংকর মহামারী এসে লকডাউনের দোহাই দিয়ে সেই অসহায় দিন মজুরের পেটে লাথি দিয়ে দু’মোটো খাবার কেড়ে নিচ্ছে।
সাধারণ শ্রমিকের চাকরি কেড়ে নিয়ে দেশের বেকারত্বের সংখ্যা দিনের পর দিন বৃদ্ধি করে দিচ্ছে সেই লকডাউন। যার ফলে বেকার যুব সমাজ আজ চুরি,ডাকাতি,চিনতাই,দর্শনের মতো জঘন্য কাজের সাথে জড়িয়ে পড়ছে,তারা নেশাগ্রস্ত হয়ে রাস্তায় কে মা,কে বোন, কে স্ত্রী না দেখেই নেশার ঘুরে দর্শনের হার বৃদ্ধি করে দিচ্ছে।পূর্বের হতাশা কাঠিয়ে বাঙালি জাতি উঠতে না উঠতেই দ্বিতীয় ধাপে সেই ভয়াবহ করোনা নামক মহামারী দেখা দিয়েছে কেড়ে নিচ্ছে প্রাণ,তার চেয়ে বেশি কেড়ে নিচ্ছে হত দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষের মুখের অন্ন।
করোনার দোহাই দিয়ে লকডাউনের নামে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। বাঙালি জাতিকে লকডাউনের মাধ্যমে রক্ষা করা সম্ভব নয় তার জন্য প্রয়োজন গণসচেতনতা সৃষ্টি আর তা সম্ভব খাদ্য ও অর্থ সংকট দূর করার মাধ্যমে। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে আমরা বাঙালিরা অনাহারে, অর্ধাহারে থেকে যে শিক্ষা পেয়েছি তার ফলস্বরুপ দ্বিতীয় ধাপে লকডাউন কার্যকর করা মুটেই সম্ভব নয়। তবে লকডাউনকে বাস্তবায়িত করতে হলে সরকারকে নিজ উদ্দ্যেগ গ্রহন করে খাদ্য ও অর্থের সংকট দূর করে তা বাস্তবে রুপান্তরিত করতে হবে।
লিখেছেনঃ আইমুন আক্তার নিপু, সোশ্যাল ওয়ার্কার, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ, গাজীপুর